নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বাংলায় রয়েছেন তিনি। বৃদ্ধ বাবা-মা থাকেন কাবুলেই। গত রবিবার তালিবান বাহিনী আফগানিস্তানের রাজধানী শহর দখল নেওয়ার পর থেকেই বাবা-মায়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে রাতের ঘুম উড়েছে পানাগড়ের পাঠানপাড়ার বাসিন্দা হাকিব খানের। টিভিতে, নেটমাধ্যমে বিভিন্ন খবর দেখে দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে আফগান পরিবারে। একাধিক বার চেষ্টা সত্ত্বেও বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না। কয়েক সেকেন্ডও যদিও বাবা-মায়ের সঙ্গে হাকিব কথা বলার সুযোগ পেতেন, তা হলে অন্তত এটুকু বলে দিতেন, ‘‘এখন কিছু দিন বাড়িতেই থাকো। বাইরে বেরিয়ো না।’’
হাকিব নিজেও তালিবানি রাজত্ব দেখেছেন। তালিবদের অত্যাচার, নৃশংসতার শিকার হয়েছেন। বছর দশেক আগে বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে চলে এসেছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ে। পাঠানপাড়ায় একটি ভাড়াবাড়িতে তাঁর ছোট্ট সংসার। নিজের একটি ব্যবসা রয়েছে। বাড়িতে এক ছেলে ও এক মেয়ে। বাবা, মায়ের সঙ্গেও প্রায়ই কথা হত তাঁদের। খোঁজখবর নিতেন। সব মিলিয়ে বেশ সুখে-শান্তিতেই বসবাস করছিল হাকিবের পরিবার। গত রবিবারই যেন মুহূর্তে বদলে গেল সব কিছু।
হাকিব বলছেন, ‘‘আগেই তো ভাল ছিল। অশান্তি-সন্ত্রাস ছিল না আমার দেশে। দেশটা আবার তালিবানের দখলে চলে যাওয়ায় প্রত্যেক মানুষের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’’
নেটমাধ্যমে আফগানিস্তানের ছবি, ভিডিয়ো দেখছেন আর আঁতকে উঠছে গোটা পরিবার। হাকিবের কথায়, ‘‘ছোটবেলার ওই ভয়াবহ স্মৃতিগুলো ফিরে আসছে। বিমানবন্দরের যে ছবি দেখলাম, তা অকল্পনীয়। আমি আর কোনও দিন ফিরে যাব না ওই দেশে।’’