সিপিএমের দফতরের সামনে মহিলাদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে চলছে স্কুলের ভিতরে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। উল্টো দিকে সিপিএমের শাখা অফিসে লাইন দিয়ে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর ফর্ম পূরণ করছেন মহিলারা। তাতে সাহায্য করছেন সিপিএমের নেতা কর্মীরা! পাশে দাঁড়িয়ে মহিলাদের ফর্ম পূরণ করে দেওয়ার কাজের তদারকি করছেন বাম নেতা-কর্মীরা। শনিবার বিরল এই দৃশ্য দেখা গেল, মেদিনীপুর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
গোটা রাজ্যের সঙ্গেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও দ্বিতীয় দফায় শুরু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। মেদিনীপুর শহরের কর্নেলগোলায় নারায়ণ বিদ্যাভবন বালিকা বিদ্যালয়ে চলছে ওই শিবির। সেই শিবিরের বাইরে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে দলের শাখা দফতরের বাইরে রয়েছেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। বিনা পারিশ্রমিকেই মহিলাদের ফর্ম পূরণ করে দিচ্ছেন বাম শিবিরের কর্মীরা। সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য সুকুমার আচার্য বলেন, ‘‘আমরা সরকারের ভাল কাজের সঙ্গে রয়েছি। কিন্তু সরকারের ভুলগুলি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলনও করব।’’ সুকুমারের কথায়, ‘‘দায়িত্বশীল বিরোধী দল হিসেবে সরকারের জনমুখী কাজে প্রশাসনকে সাহায্য করা, মানুষের পাশে থাকতেই এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।’’
এ নিয়ে বিজেপি-র জেলা সভাপতি সৌমেন তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল-সিপিএম দুই দলই এখন একই কয়েনের এ পিঠ ও পিঠ। সিপিএম-কে মানুষ বর্জন করেছে তাই তারা কোথাও নেই।’’ জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান দীনেন রায়ের দাবি, ‘‘এই ধরনের উদ্যোগ ভাল। মানুষের পাশে থাকার কথা সবাই বলে। কিন্তু তা খুব কম লোকই বাস্তবে করেন। সিপিএম এই ধরনের কাজ করছে, ওদের ধন্যবাদ।’’
রাজ্যে সদ্য হয়ে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য হাতে ফেরার পর থেকে ভোটযুদ্ধে বামেদের অন্যতম হাতিয়ার ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে। আবার ‘যাহা বাম তাহাই রাম’, এই অভিযোগ এখনও সিপিএমের গা থেকে মোছেনি। এই আবহে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য জনগণের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে ময়দানে নেমেছেন বাম নেতা কর্মীরা। যা ভিন্ন জল্পনার জন্ম দিয়েছে।