গর্ত থেকে বেরোচ্ছে ধোঁয়া। রবিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র
মাটি ফুঁড়ে ধোঁয়া বেরোনোয় আতঙ্ক তৈরি হল ইসিএলের কুনস্তরিয়া এরিয়ার অমৃতনগর কোলিয়ারি এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার লোকালয় থেকে শ’খানেক মিটার দূরে একটি গর্ত থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। আশপাশে ফাটলও দেখা গিয়েছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। ইসিএলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
ওই কোলিয়ারির ওল্ড ডিসেপেনসরি এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এ দিন ভোরে গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন তাঁরা। চার দিকে বেশ কিছুটা জমি বসে গিয়েছে। কিছু ফাটলও ধরেছে বলে তাঁদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা গঙ্গাধর সিংহ, স্বপন মাঝিরা অভিযোগ করেন, অমৃতনগর কোলিয়ারি লাগোয়া পোস্তডাঙা, নিরুপাড়া, ছাতাপাড়া, হাড়াভাঙা চুনাভাট্টি, পুরোনমল, নাথমল, মুর্গাথল এবং বাবুপুর এলাকায় বিভিন্ন সময়ে মাটি ফুঁড়ে ধোঁয়া বেরোনোর ঘটনা ঘটে। ইসিএলের তরফে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হলেই মাটিতে ফাটল ধরে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। তিলকি সিংহ, নিমাই মণ্ডলেরা জানান, বারবার এমন ঘটতে থাকায় তাঁরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাঁদের আরও দাবি, মাঝে-মধ্যে বাড়িতে ভূগর্ভ থেকে নানা রকম আওয়াজ শোনা যায়। তাঁদের ধারণা, মাটির নীচে আগুন জ্বলছে। যে কোনও দিন বড় রকম ধস নামার আতঙ্ক নিয়ে বাস করতে হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।
শ্রমিক সংগঠনগুলি এই পরিস্থিতির জন্য ইসিএলকেই দায়ী করছে। সিটু নেতা মনোজ দত্ত, আইএনটিইউসি নেতা দেবাশিস রায়চৌধুরী, কেকেএসসি নেতা বাবু রায়দের দাবি, রাষ্ট্রায়ত্তকরণের পরে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন খনিগুলি অধিগ্রহণ করেছিল কেন্দ্র। কোল ইন্ডিয়ার অধীনস্থ সংস্থাগুলি পুরনো খননের সমস্যাগুলি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করেই কয়লা তোলা শুরু করে। ঠিকমতো বালি ভরাট না করায় ভূগর্ভের নানা অংশ ফাঁকা থেকে গিয়েছে। এর জেরে বড় দুর্ঘটনা ঘটলে ইসিএলকেই তার দায় নিতে হবে, দাবি তাঁদের। মনোজবাবুর অভিযোগ, ‘‘সিটু মামলা করার পরে পুনর্বাসনের জন্য টাকা বরাদ্দ হলেও এখনও পর্যন্ত কাজ প্রায় কিছুই হয়নি। এর জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী।’’ আইএনটিটিইউসি নেতা বাবু রায়ের বক্তব্য, ‘‘পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে জায়গা পাওয়া মূল সমস্যা হচ্ছে।’’
অমৃতনগর কোলিয়ারির এজেন্ট ওমপ্রকাশ যাদবেরও দাবি, খনি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন থাকাকালীন অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কয়লা কাটা হয়েছিল। তার নকশাও সংরক্ষণ করা হয়নি। তবে তিনি বলেন, ‘‘ধোঁয়া-আগুন বেরোলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বড়সড় ধসের সমস্যা এড়াতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’