পঞ্চায়েতকে ই-টেন্ডারের নির্দেশ

পাণ্ডবেশ্বর ব্লকে মোট ছ’টি পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ক’টি পঞ্চায়েতেই কাজের বরাত দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে কমবেশি প্রশ্ন উঠছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২০
Share:

ব্লক প্রশাসনের নির্দেশ। নিজস্ব চিত্র

কাজের বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছিল। স্বচ্ছতা আনতে পঞ্চায়েত স্তরে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কাজের বরাত দেওয়ার নির্দেশ দিল ব্লক প্রশাসন। পাণ্ডবেশ্বরের সমস্ত পঞ্চায়েতকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিডিও কৌশিক সমাদ্দার জানান।

Advertisement

পাণ্ডবেশ্বর ব্লকে মোট ছ’টি পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ক’টি পঞ্চায়েতেই কাজের বরাত দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে কমবেশি প্রশ্ন উঠছিল। বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থা অনিয়মের অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। অস্বচ্ছতার অভিযোগ মিলছিল এলাকাবাসীর একাংশের তরফেও। সে কারণেই শুক্রবার ওই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এখনকার ও পরবর্তী সমস্ত কাজের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার করে বরাত দিতে বলা হয়েছে।

কী ধরনের অভিযোগ উঠছিল? ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছিলেন, ব্লক অফিসের উল্টো দিকে একটি রাস্তার কাজ ২০১৭ সালে শুরুর কথা জানিয়ে বোর্ড বসানো হলেও এখনও তা শুরু হয়নি। পাণ্ডবেশ্বর থানা থেকে জোয়ালভাঙা ও ছোড়া হাসপাতাল থেকে ছোড়া গ্রামে যাওয়া রাস্তা সংস্কার করার কয়েক মাসের মধ্যেই আবার ভেঙে গিয়েছে। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এমন হয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। নামপ্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, পঞ্চায়েত থেকে টেন্ডারের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার দিন ও সময় ঘোষণা করা হচ্ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আবেদনপত্র জমা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছিল। তার জেরে অনেকেই আবেদনপত্র জমা দিতে পারছিলেন না।

Advertisement

সিপিএম নেতা প্রবীর মণ্ডল, বিজেপি নেতা তন্ময় ঘোষদের অভিযোগ, নিজেদের লোকজনকে কাজ পাইয়ে দিচ্ছিলেন শাসক দলের নেতারা। তাই টেন্ডারের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় দুপুর ২টো লেখা থাকলেও ১টার মধ্যেই তা জমা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রবীরবাবু দাবি করেন, ‘‘এখন ব্লক প্রশাসনের নির্দেশ থেকেই পরিষ্কার, আমরা এত দিন স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির যে অভিযোগ করছিলাম, তা সত্য।’’ তাঁদের আরও দাবি, কাজ পাইয়ে দেওয়ার পরে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণেই প্রশাসন এমন নির্দেশ জারি করতে বাধ্য হয়েছে।

বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধানেরা অবশ্য অনিয়মের কথা মানতে চাননি। হরিপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গোপীনাথ নাগ, ছোড়া পঞ্চায়েতের প্রধান শঙ্কুন্তলা বাউরিরা দাবি করেন, তাঁদের কাছে এমন অভিযোগ আগে কেউ জানাননি। বিডিও যে নিদের্শিকা জারি করেছেন, তা স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা। পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এর আগে স্বচ্ছতা আনতে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত একাধিক বার ই-টেন্ডারের মাধ্যমে বরাত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পাণ্ডবেশ্বরের বিডিও সেই পথেই হেঁটেছেন।”

বিডিও কৌশিক সমাদ্দার জানান, প্রতিটি পঞ্চায়েতকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, এ বার থেকে ই-টেন্ডারের মাধ্যমেই কাজের বরাত দিতে হবে। টেন্ডার ডাকার আগে তাঁর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement