ফাইল চিত্র।
আমপান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নীলিমা কপ্তি। মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়ে ১৫ জনের নাম জানিয়েছেন তিনি। নীলিমাদেবীর দাবি, ওই ১৫ জনের কেউই আর্থিক অনুদান পাওয়ার যোগ্য নন। যদিও ব্লক প্রশাসনের দাবি, নিয়ম মেনেই ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের নির্দেশে দিয়েছেন কালনার মহকুমাশাসক সুমন সৌরভ মোহান্তি।
৮ জুলাই পঞ্চায়েত সমিতির প্যাডে নীলিমাদেবী মহকুমাশাসককে দু’পাতার চিঠি পাঠান। পঞ্চায়েত, গ্রামের নাম ধরে ধরে কারা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য নয়, তা জানিয়েছেন তিনি। নামগুলি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ারও আবেদন করেছেন তিনি। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পঞ্চায়েত পাঠিয়েছিল। ব্লক থেকে বিডিও-র স্টাফেরা তা তদন্ত করে দেখেন। আমাকে তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়নি। অথচ ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকায় আমায় সাক্ষর করতে বলা হয়। আমি তদন্ত না করি ওই তালিকায় সই করতে চাইনি।’’ যদিও তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলি থেকে প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে মেনে নিলেও দলের বিরুদ্ধে সরাসরি কিছু বলেননি তিনি। তাঁর দাবি, তিনি নিজে তদন্ত করে দেখেছেন, ব্লক প্রশাসনের চূড়ান্ত করা তালিকায় পিণ্ডিরা, বৈদ্যপুর এবং সাতগাছিয়া এলাকার কয়েকজন এমন আছেন যাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এর পরেই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
যদিও ব্লক প্রশাসন তালিকায় অস্বচ্ছতার কথা মানতে চায়নি। বিডিও মিলন দেবগড়িয়া জানান, পঞ্চায়েতগুলি থেকে তালিকা পাওয়ার পরে সরকারি আধিকারিকেরা তদন্ত করে দেখেছেন। পঞ্চায়েতগুলি থেকে মোট ১৮৬ জনের নাম পাঠানো হয়। তদন্তে ১০৫ জনের পুরো বাড়ি নষ্ট হওয়ার কথা জানা গিয়েছে। বাকিগুলি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্তর তালিকায় ঠাই পেয়েছে। তাঁর দাবি, পুলিশকে তালিকা পাঠানো হয়েছে। তাদের তদন্তেও একই তথ্য উঠে এসেছে। বিডিও বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে তালিকায় জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সই থাকতে হয়। কিন্তু নিজে তদন্ত না করে স্বাক্ষর করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়ে দিয়েছি।’’
কালনা মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘সভাপতির তালিকা পেয়েছি। তিন জনের একটি তদন্ত কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে তাঁদের বাড়ি পৌঁছে সেখানকার ছবি সহ রিপোর্ট দিতে। রিপোর্ট জমা পড়ার পরে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’