দুর্গাপুরে নামল বাস
Coronavirus

যাত্রী না বাড়লে সমস্যা, মন্তব্য মালিকপক্ষের

মঙ্গলবার আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ও মিনিবাস কার্যত ছাড়েনি বলেই জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০৩:৪৭
Share:

সিটিসেন্টার বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীর অপেক্ষায় মিনিবাস। নিজস্ব চিত্র

মিনিবাস চলাচলের ক্ষেত্রে মঙ্গলবার দুই চিত্র দেখা গিয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমায়। আসানসোলে কোনও রুটেই পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস ও মিনিবাস চলতে দেখা যায়নি। তবে দুর্গাপুরে সব রুটেই কয়েকটি মিনিবাস চলেছে বলে যাত্রী ও বাস মালিকেরা জানিয়েছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ও মিনিবাস কার্যত ছাড়েনি বলেই জানা গিয়েছে। যে কয়েকটি মিনিবাস চলতে দেখা গিয়েছে, সেগুলি বরাকর ও বার্নপুর থেকে নির্দিষ্ট কয়েকটি রুটে য়াতায়াত করেছে। ‘আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘যাত্রী খুব কম থাকায় বাস কম চলেছে।’’

কিন্তু শহরবাসী জানান, আসানসোল থেকে বরাকর, চিত্তরঞ্জন, সালানপুর, বারাবনি, বার্নপুর-সহ বিভিন্ন রুটে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘক্ষণ। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বাস রুটে চলাচল করা অটো পরিবহণের মূল ভরসা হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান বেশ কয়েকজন যাত্রী।

Advertisement

তৃণমূল প্রভাবিত ‘আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘সোমবার অটো চালকদের সভা ডেকে ঠিক করা হয়, মিনিবাস চলাচল স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক বাস রুটেই মিনিবাসের ভাড়ায় অটো চলবে। যাত্রী-দুর্ভোগ কমাতেই এই সিদ্ধান্ত।’’

জেলা পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জন দাসমুন্সি বলেন, ‘‘মালিকেরা দাবি করছেন, যাত্রী খুবই কম থাকায় বাস চালানোর খরচ উঠছে না। তবুও বাস মালিকদের সঙ্গে ফের বৈঠক করে রাস্তায় বাসের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হবে।’’

তবে দুর্গাপুর থেকে সব রুটেই কয়েকটি করে বাস চলেছে বলে মালিক ও যাত্রীরা জানান। কিন্তু বড় বাস ও মিনিবাসে যাত্রী সংখ্যা ছিল হাতে গোণা। এই পরিস্থিতিতে ভাড়া না বাড়িয়ে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কত দিন পরিষেবা চালু রাখা যাবে তা নিয়ে সংশয়ে দুর্গাপুরের বাস মালিকেরা।

তবে জেলা পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জনবাবুর দাবি, ‘‘বহুদিন পরে রাস্তায় বাস নেমেছে। যাত্রীরা অনেকেই সে খবর পাননি। পরপর কয়েকদিন রাস্তায় বাস চললেই যাত্রী সংখ্যা বাড়বে, এটা বাস মালিকদেরও বলা হচ্ছে।’’ এ দিন দুর্গাপুরে মিনিবাস মালিকদের অন্যতম সংগঠন ‘দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কাজল দে-ও বলেন, ‘‘সোম ও মঙ্গলবার মহকুমা জুড়ে পরিষেবা চালু হয়েছে, এ বিষয়ে প্রচার করা হয়েছে। আশা করা যায়, ধীরে ধীরে যাত্রীসংখ্যা বাড়বে।’’ দুর্গাপুর মহকুমায় প্রায় আড়াইশো মিনিবাসের ৪০ শতাংশ পথে নেমেছিল বলে দাবি মালিকদের।

তবে কাজলবাবুর দাবি, ভাড়া না বাড়ালে তেলের দাম, কর্মীদের বেতন, যন্ত্রাংশের রক্ষণাবেক্ষণ, কাগজপত্র বাবদ যা খরচ হবে তাতে কোনও ভাবেই মিনিবাস চালিয়ে পোষাবে না। মিনিবাস মালিকদের অন্য একটি সংগঠন ‘দুর্গাপুর মিনিবাস অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক অলোক চট্টোপাধ্যায়েরও দাবি, ‘‘ভাড়া বাড়ানো বা সরকারের তরফে বিকল্প আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া দীর্ঘদিন মিনিবাস চালানো সম্ভব হবে না।’’ জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্য থেকে যেমন নির্দেশিকা আসবে তা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তবে দুর্গাপুরের মিনিবাস মালিকেরা জানান, এ দিন তাঁরা নিজেরাই মিনিবাস জীবাণুমুক্ত করা, কর্মীদের ‘মাস্ক’, ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’ দিয়েছেন। ‘মাস্ক’ না পরলে যাত্রীদের তোলা যাবে না, ২৭ জনের বেশি মিনিবাসে যাত্রী সংখ্যা যাতে না হয়, এ সব বিষয়েও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement