পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভা বিদ্যাপীঠে দুয়ারে সরকারের শিবিরে। মঙ্গলবার। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল
দ্বিতীয় দিনেও ভিড় উপচে পড়ল দুয়ারে সরকারের বিভিন্ন শিবিরে। সকাল থেকে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেন বহু বাসিন্দা। দূরত্ববিধি প্রায় কোথাও মানা হয়নি বলে অভিযোগ। পূর্বস্থলীতে ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুই মহিলা। তাঁদের মধ্যে এক জনকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার, শিবিরের প্রথম দিনে জেলার মোট ৯১৪টি শিবিরে ৬২,৫০৮ জন এসেছিলেন। ৫০,৩৫৬ জন ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের জন্য আবেদন করেন। মঙ্গলবার, দ্বিতীয় দিনেও এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য নানা শিবিরে মহিলাদের ভিড়ই বেশি দেখা যায়। অনেক জায়গায় গোল দাগ করে লাইনে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা হলেও, তা কার্যত মানা হয়নি। তবে এরই মধ্যে অন্য চিত্র দেখা যায় কালনা
কলেজের শিবিরে। সেখানে এ দিন বিশেষ ভিড় ছিল না। শিবির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের দাবি, এক-এক দিন এক-একটি ওয়ার্ডকে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে, তা প্রচার করা হয়েছে। ফলে, নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ শিবিরে আসছেন।
পূর্বস্থলীর কালেখাঁতলা ২ পঞ্চায়েতের শিবিরটি বসেছে বিশ্বরম্ভা বিদ্যাপীঠ স্কুলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন বেলা বাড়তেই লাইনে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এক মহিলা পড়ে গিয়ে আহত হন। আর এক মহিলা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ্য অজিতকুমার ঘোষ জানান, গরমে অসুস্থ হওয়া মহিলাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর দাবি, প্রচার করে বিভিন্ন দিনে এলাকার মানুষকে ভাগ ভাগ করে শিবিরে আসতে বলা হলেও ২১টি সংসদের মানুষজনই এক সঙ্গে শিবিরে আসায় ভিড় জমে গিয়েছে। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দোগাছিয়ায় মিনাপুর নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিবিরেও একই রকম ভিড় দেখা যায়।
বর্ধমান শহরের টাউন হলের শিবিরে দেখা যায়, নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়ানোর জন্য গোল দাগ দেওয়া হলেও লাইনে দাঁড়ানো মানুষজন তা মানছেন না। বেশিরভাগের মুখে মাস্ক থাকলেও, দূরত্ববিধি উধাও। বর্ধমান ২ ব্লকের বন্ডুলের কাঁদরা অতুলকৃষ্ণ হাইস্কুল, বর্ধমান ১ ব্লকের রায়ান হাইস্কুলের শিবিরেও দেখা যায় সে চিত্রই।
কাটোয়ার কাশীরামদাস বিদ্যায়তনে শিবিরেও ভাল ভিড় জমে এ দিন। পুলিশ মাইকে ভিড় না করার জন্য প্রচার করে। মাস্কও বিলি করা হয়। স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারের তরফে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বহু মানুষ আসায় সব সময়ে তা মানা হচ্ছে না। করোনা-বিধি মেনেই যত বেশি সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ মন্তেশ্বরের বাঘাসনে মালডাঙা হাইস্কুলে মঙ্গলবার শিবির পরিদর্শন করেন মহকুমাশাসক (কালনা) সুরেশকুমার জগৎ। ছিলেন বিডিও (মন্তেশ্বর) গোবিন্দ দাস।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সোমবার প্রতি শিবিরে গড়ে ১,৭৮৬ জন এসেছিলেন। সব চেয়ে বেশি লোক এসেছিলেন জামালপুরে। সংখ্যা ছিল ৮,৫৭৪ জন। ভিড় কমানোর জন্য সব প্রকল্পের কাউন্টারেই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পাশাপাশি, লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের ফর্ম দেওয়া-নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।