কুকুরের যত্নে ব্যস্ত সংগঠনের কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় এক যুগ আগের ঘটনা। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে তিনি আচমকা লক্ষ করলেন রাস্তার পাশেই পড়ে রয়েছে অসুস্থ একটা কুকুর। সেই শুরু। এরপরে কাটোয়া সার্কাস ময়দানের বাসিন্দা জয়ন্তিকা দাস আট জনকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুললেন সংগঠন। মঙ্গলবার সেই সংগঠনটিই ব্লক প্রাণিসম্পদ বিকাশকেন্দ্র ও পশু চিকিৎসকদের কাছে আহত পশুদের চিকিৎসা, সুরক্ষা-সহ মোট ছ’দফা দাবি জানাল।
রাস্তার ধারে পড়ে থাকা পশু, পাখিদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি মহকুমা প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্মী থাকার কথা। কিন্তু কাটোয়া মহকুমায় এমন কর্মী থাকলেও তাঁরা কার্যত কোনও কাজই করেন না বলে অভিযোগ সংগঠনটির। সংগঠনের তরফে তুলিকা দাস, রাজেশ কয়াল, অনুপ মুখোপাধ্যায়দের দাবি, পশুহাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা, আহত পশু-পাখিদের জন্য ২৪ ঘণ্টা আপৎকালীন চিকিৎসার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। জয়ন্তিকাদেবীর দাবি, বেওয়ারিশ কুকুরদের নির্বীজকরণের ব্যবস্থাও করতে হবে।
মাসখানেক শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ির বাইরে নীলজলের বোতল ঝুলতে দেখা যাচ্ছে। এই নীল জলের বোতল শুঁকে কুকুরের দল খানিক দূর চম্পট দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না বলে দাবি পশুবিশেষজ্ঞ সুনীল মণ্ডলের।
সংগঠনের সদস্য নির্মল মণ্ডল প্রায় এক দশক ধরে নিজের গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে ফি দিন পুরসভা ও আদালত চত্বরের প্রায় ৭০টি কুকুরকে খাওয়ান। কোনও পশু অসুস্থ হলে তাদের চিকিৎসারও ব্যবস্থাও করেন। তবে এ ভাবে দিনের পর দিন ব্যক্তিগত উদ্যোগে কতখানি পশু-পাখির শুশ্রূষা করা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। নির্মলবাবুর নিজেরও দাবি, ‘‘পাগল হয়ে যাওয়া ও অসুস্থ পশুদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা দরকার।’’
তবে অসুস্থ পশুদের ঠিক সময়ে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসা ও টীকাকরণের আশ্বাস দিয়েছেন ব্লক পশুচিকিৎসক হেমন্ত মণ্ডল।