—ফাইল চিত্র।
রাজ্যের অন্য নানা পুরসভার মতো পূর্ব বর্ধমানে মেয়াদ ফুরনো তিন পুরসভাতেও বিদায়ী পুরপ্রধানকে মাথায় রেখে প্রশাসকমণ্ডলী তৈরির নির্দেশ দিল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। কালনা, কাটোয়া ও দাঁইহাট— তিন পুরসভাই ছিল তৃণমূলের দখলে। বিদায়ী বোর্ডের পুরপ্রধানকেই প্রশাসক হিসাবে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
পুরভোটের প্রস্তুতি হিসাবে এ বছরের গোড়ার দিকে ওয়ার্ডভিত্তিক আসন সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশ হয়েছিল। ভোটের প্রস্তুতিও শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু করোনা রুখতে ‘লকডাউন’-এর পরিস্থিতিতে পিছিয়ে গিয়েছে পুরভোট। এরই মধ্যে বুধবার কালনা, কাটোয়া ও দাঁইহাট পুরসভার নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়। আজ, বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে মেমারি পুরবোর্ডের মেয়াদ।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ওই তিন পুরসভায় দু’জনের প্রশাসকমণ্ডলী গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। সেগুলির চেয়ারপার্সন হিসাবে নাম রয়েছে বিদায়ী পুরপ্রধানদেরই। কাটোয়া পুরসভায় প্রশাসকমণ্ডলীতে বিদায়ী পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ছাড়া, নাম রয়েছে প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমর রামের। দাঁইহাট পুরসভায় প্রশাসকমণ্ডলীতে রয়েছেন বিদায়ী পুরপ্রধান শিশির মণ্ডল ও বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান প্রদীপকুমার রায়। একই ভাবে কালনাতেও বিদায়ী পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগের সঙ্গে প্রশাসকমণ্ডলীতে রয়েছেন বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বুধবার বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও শিশির মণ্ডল বৃহস্পতিবার থেকে প্রশাসক হিসাবে কাটোয়া ও দাঁইহাট পুরসভা পরিচালনা করবেন।’’ কালনা পুরসভায় এ দিন দেবপ্রসাদবাবুকে সংবর্ধনা দেন কাউন্সিলর সমরজিৎ হালদার।
যদিও পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে বিরোধীরা। কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘গণতন্ত্রকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে তৃণমূল। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও রাজ্য সরকার তাদের আবার লুটপাটের সুযোগ করে দিল। ‘লকডাউন’ ওঠার পরেই আমরা এর বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনে নামব।’’
কাটোয়ার বিজেপি নেতা অনিল দত্তেরও অভিযোগ, ‘‘ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে পুরপ্রধানদের প্রশাসকের আসনে বসাল শাসক দল। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা আন্দোলনে নামব।’’ বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি ধনঞ্জয় হালদারের অভিযোগ, ‘‘উচিত ছিল, সরকারি আধিকারিকদের প্রশাসক হিসাবে বসানো। তা না করে দলের পুরপ্রধানদেরই প্রশাসক করা দলতন্ত্রের উদাহরণ।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ অবশ্য বলেন, ‘‘আইনানুগ পথেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’’ নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পরে তিন বিদায়ী পুরপ্রধানই বলেন, ‘‘সরকার যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করব।’’