স্টল থেকে পেঁয়াজ নিতে ব্যস্ত। নিজস্ব চিত্র
এক মাস ধরে অগ্নিমূল্য পেঁয়াজ। হেঁশেলের অতি প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যখন সাধারণ মানুষের চিন্তার অন্ত নেই, তখন পেঁয়াজকে সচেতনতার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারির একটি ক্লাব। মেমারি ব্লক কৃষিমেলায় এ বার তাঁদের স্টল থেকে তিন কেজি প্লাস্টিকের বদলে মিলছে এক কেজি পেঁয়াজ।
১৯ থেকে ২১ ডিসেম্বর মেমারির রসুলপুর অনাথ সমিতিতে চলছে মেমারি ব্লক আয়োজিত কৃষিমেলা। সেখানে স্টল দিয়ে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’, অগ্নি সুরক্ষা, ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরিতে সাহায্য করার পাশাপাশি মাটির থালা, গ্লাস, বাটি, টব প্রদর্শনী ও বিক্রির ব্যবস্থা রেখেছে এই ক্লাব। ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির অঙ্গ হিসাবে বই পড়ার জন্যও একাধিক ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সব থেকে নজর কাড়ছে পেঁয়াজ।
উদ্যোক্তারা প্রচার করছেন, ‘আপনার ব্যবহার করা, আশপাশে পড়ে থাকা, পরিবেশ দূষিত করা ব্যবহৃত প্লাস্টিক নিয়ে আসুন। আর নিয়ে যান এক কেজি পেয়াঁজ’। শুধু মেলার মাঠ থেকেই নয়, মেলা শুরুর আগে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’তেও লাগাতার প্রচার করা হয়েছে, দাবি তাঁদের। এ দিন মেলা শুরুর প্রথম দিনেই ভিড় দেখা যায় ওই স্টলে। স্টলের দায়িত্বে থাকা স্মরজিৎ হাজরা, দীপঙ্কর বিশ্বাসেরা জানান, বিকেল পর্যন্ত ২৫ জন প্লাস্টিক দিয়ে পেঁয়াজ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সম্প্রতি পেঁয়াজ দিয়ে পথ নিরাপত্তা নিয়েও সচেতন করে এই ক্লাব। পাল্লা রোড দিয়ে হেলমেট পরে যাওয়া মোটবাইক চালকদের থামিয়ে এক কেজি করে পেঁয়াজ উপহার দেওয়া হয়। ৩২ জন পেঁয়াজ পেয়েছিলেন সে দিন। উদ্যোক্তারা জানান, আজ, শুক্র ও শনিবারও মেলার স্টলে এই সুযোগ মিলবে।
ক্লাবের অন্যতম কর্তা সন্দীপন সরকার জানান, বাজারে পেঁয়াজ এখন ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক দিকে সে টাকা সাশ্রয় হবে। অন্য দিকে ক্ষতিকারক প্লাস্টিকের ভার কমবে সমাজ থেকে। পরে এই প্লাস্টিক প্রক্রিয়াকরণ করার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ দিন প্লাস্টিকের বদলে পেঁয়াজ পান শুভেন্দু সাঁই, বাণীব্রত দাস, দেবপ্রসাদ ঘোষেরা। তাঁরাও বলেন, ‘‘শুধু পেঁয়াজ পেয়ে নয়, কিছু প্লাস্টিক সমাজ থেকে সরিয়ে দিতে পারলাম ভেবেও ভাল লাগছে।’’