দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অকুস্থলে যাচ্ছেন পুলিশ এবং সিআইএসএফ জওয়ানরা। — নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের নারায়ণকুড়ির পর এ বার জামুড়িয়া। ফের ইসিএলের খোলামুখ খনিতে ধস। আর সেই সময় কয়লা কুড়োতে গিয়ে পাথরের চাঙড় চাপা পড়ে মৃত্যু এক নাবালকের। ঘটনাটি জামুড়িয়ার ইসিএলের শ্রীপুর এরিয়ার শিবডাঙা খোলামুখ খনির। এই ঘটনাতেও রাজ্যকেই নিশানা করেছে বিরোধী বিজেপি।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় জামুড়িয়া থানার পুলিশ এবং সিআইএসএফ। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে শিবডাঙা খোলামুখ খনিতে এক নাবালক অবৈধ ভাবে কয়লা কুড়োতে গিয়েছিল। খনির ভিতরে ঢুকে কয়লা কুড়োনোর সময় আচমকা কয়লার বড় বড় চাঙর খসে পড়ে ওই নাবালকের উপর। কয়লার চাঁইয়ের তলায় আটকে পড়ে নাবালক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশবাহিনী এবং সিআইএসএফ। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে ওই নাবালকের। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
ডিসি সেন্ট্রাল কুলদীপ সোনেওয়ান বলেন, ‘‘কোলিয়ারির মধ্যে একটি নাবালকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। কয়লা কুড়োতে গিয়ে মৃত্যু, না কি অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’
সম্প্রতি নারায়ণকুড়িতে খনিধসে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার কোলিয়ারির কুনস্তরিয়ায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের। বিক্ষোভ চলাকালীনই অগ্নিমিত্রা জানতে পারেন, পাশের খনিতে আরও এক নাবালকের মৃত্যুর খবর। এর পরেই বিক্ষোভের সুর আরও চড়ান তিনি। একযোগে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন। তিনি বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। নারায়ণকুড়িতে সাত জনের মৃত্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি করছেন। এ বার এই ঘটনাকেও রাজনীতির হাতিয়ার করবেন। কিন্তু এ ভাবে ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। আমি নিজে ওখানে যাব, দেখি কী করে ধামাচাপা দেয়। ইসিএলের কিছু কিছু আধিকারিক আর আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে এই ঘটনার পুরো দায় নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী, আপনাকে স্বীকার করতেই হবে যে, আপনি ব্যর্থ।’’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভোরে আসানসোলের রানিগঞ্জের নারায়ণকুড়ি কয়লাখনি থেকে তিন শ্রমিকের দেহ উদ্ধার হয়। বুধবার বিকেলে ইসিএলের কুনুস্তরিয়া এলাকার এই খনিতে ধস নেমেছিল। তাতে কয়েক জন শ্রমিকের চাপা পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল। রাতভর অভিযান চালিয়ে তিন শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই একই জেলায় আবারও খোলামুখ খনিতে ধস নেমে মৃত্যু হল এক নাবালকের।