কারবারে বাধা পেয়েই কি খুন কাউন্সিলরকে

পুলিশ জানায়, রবিবার সন্ধ্যায় আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে টিঙ্কুকে গ্রেফতার করা হয়। কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের ইনস্পেক্টর দেবজ্যোতি সাহার নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়েছে। টিঙ্কুর ফোনের ‘কললিস্ট’ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তবে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের এখনও হদিস মেলেনি বলে পুলিশ জানায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০১:১৭
Share:

ধৃত টিঙ্কু শেখ। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের ঘটনায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন আরও এক অভিযুক্ত। সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন কাদের শেখ নামে ওই অভিযুক্ত। এই ঘটনায় রবিবারই গ্রেফতার করা হয়েছে তার দাদা টিঙ্কু শেখকে। এ দিন আদালত টিঙ্কুকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজত ও কাদেরকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। টিঙ্কুকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

শনিবার রাতে বরাকরের মনবেড়িয়ায় বাড়ির সামনে গুলিতে খুন হন আসানসোলের ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খালেদ খান। পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে টিঙ্কু, কাদের ও তাদের আর এক ভাই শাহিদ শেখের নামে অভিযোগ করা হয়। অভিযুক্তেরা নিহতের আত্মীয় বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানায়, রবিবার সন্ধ্যায় আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে টিঙ্কুকে গ্রেফতার করা হয়। কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের ইনস্পেক্টর দেবজ্যোতি সাহার নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়েছে। টিঙ্কুর ফোনের ‘কললিস্ট’ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তবে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের এখনও হদিস মেলেনি বলে পুলিশ জানায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাদের যুব তৃণমূলের কুলটি ব্লক কমিটির সম্পাদক। তার সম্পর্কে তথ্য পেতে সংগঠনের কয়েকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, টিঙ্কু নানা রকম বেআইনি কাজ-কারবারের সঙ্গে যুক্ত। খালেদ তাতে বাধা দিতেন। কয়েকটি ক্ষেত্রে পুলিশকেও ব্যবস্থা নিতে বলায় দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ বাড়ছিল, দাবি কিছু বাসিন্দার।

Advertisement

বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, খালেদ এলাকায় খাসজমি দখল, পুকুর বোজানো, জাতীয় সড়কে অবৈধ কয়লা ও গরু পাচার রুখতে গিয়ে কাদেরের বিরোধিতার মুখে পড়েছেন। দিন কয়েক আগেই মনবেড়িয়ায় একটি পুকুর বোজানোর বিরোধিতা করেন খালেদ। যুব সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে কাদের টিঙ্কুর নানা কারবারে সাহায্য করত বলেও অভিযোগ।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, যুব সংগঠনের পদে থেকে কাদেরের এই সব কাজকর্ম সম্প্রতি দলের উচ্চ নেতৃত্বকেও জানান খালেদ। দলের নেতারা কাদেরকে ডেকে সতর্কও করেন। খুনের ঘটনার পিছনে সে সংক্রান্ত কোনও আক্রোশ কাজ করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানান। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাদেরকে দলে রাখা হবে না বলে জানান তৃণমূলের কুলটি ব্লক সভাপতি মহেশ্বর মুখোপাধ্যায়।

খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার অশান্ত হয়ে ওঠে বরাকর। সোমবার অবশ্য আর কোনও গোলমাল হয়নি। এলাকায় পুলিশের টহল রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে টিঙ্কু। এ দিন আদালতে তোলার সময়ে সে দাবি করে, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনও ভাবেই জড়িত নই। আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাদেরকে জেরা করার জন্য তাকে হেফাজতে নিতে আদালতে আবেদন করা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement