বর্ধমানের পুরনো রেলসেতু। ছবি: উদিত সিংহ।
নতুন ফুট ওভারব্রিজ (এফওবি) তৈরি করে বর্ধমান-কাটোয়া রোডের উপরে পুরনো রেলসেতু (আরওবি) ভাঙার প্রস্তাব দিয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। সে প্রস্তাবে সায় দিল রেল। আপাতত ওই সেতু ভাঙা হচ্ছে না। তবে রেলের তরফে সেতুর উপরে যে কোনও রকমের যান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জেলা প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।
সোমবার বর্ধমান-কাটোয়া রোডের উপরে প্রায় ৯২ বছরের পুরনো সেতুর ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে আলোচনায় বসেন জেলাশাসক মহম্মদ এনাউর রহমান, পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও ডিআরএম (হাওড়া) সঞ্জয়কুমার সাহা। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আগেও চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এ দিনও ফুটব্রিজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফুটব্রিজের প্রয়োজনীয়তার কথা সবাই মেনে নিয়েছেন।’’ বৈঠক শেষে ডিআরএম বলেন, ‘‘ফুটব্রিজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফুটব্রিজ তৈরির পরে পুরনো রেলসেতু ভাঙা হবে।’’ রেল জানিয়েছে, আট ফুট চওড়া ফুট ওভারব্রিজ তৈরির জন্য চার কোটি টাকা খরচ হবে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পুরনো সেতুর ভাঙার ব্যাপারে জোর দেন রেলের কর্তারা। তাঁদের দাবি, ওই সেতুটি পরিত্যক্ত। সেতুর নীচের চাঙড় খসে পড়ছে। বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে। তা ছাড়া, ওই সেতু না ভাঙলে চার, পাঁচ, ছয় ও সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মের লাইন সোজা করা যাচ্ছে না। লাইন সোজা না হলে, ট্রেনের গতিও কম থাকবে, দাবি তাঁদের। যদিও জেলা প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়, ওই সেতু ভাঙলে বর্ধমান শহরের একটা বড় অংশের মানুষ মুশকিলে পড়বেন। নতুন সেতুতে উঠতে গেলেও তাঁদের অন্তত দেড় কিলোমিটার রাস্তা ঘুরতে হবে। আর ওই সেতু সাইকেল চলাচল বা সাধারণ মানুষের হাঁটার পক্ষে অনুপযুক্ত।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বর্ধমান-কাটোয়া রোডের উপরে ঝুলন্ত সেতুটির উদ্বোধন হয়। তার পর থেকেই পুরনো রেলসেতু ভেঙে ফেলার জন্য রেলের তরফে বারবার বলা হয় জেলা প্রশাসনকে। জেলা প্রশাসনের দাবি, আগে হাওড়া ডিআরএম দফতরে বৈঠক হয়েছিল। সেখানেও সাইকেলের মত ধীরগতির যানবাহন, বয়স্কদের যাতায়াতের জন্য বিকল্প পথের দাবি করা হয়েছিল। আপত্তি জানানো হয়েছিল পুরনো রেলসেতু ভাঙাতেও। এ দিন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পরে, ‘ফুটব্রিজ’ তৈরির দাবি মেনে নিয়েছে রেল। একই সঙ্গে পুরনো রেলসেতু ভাঙা হবে না বলেও জানিয়েছে ডিআরএম। তিনি বৈঠকে জানান, পুরনো রেল সেতুর অবস্থা খুবই খারাপ। সাইকেল আর হাঁটা ছাড়া, অন্য কোনও গাড়ির চাপ সহ্য করতে পারবে না। পুরনো সেতুর দু’দিকে বোর্ড দিয়েও রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ‘দুর্বল সেতু, পারাপারের অনুপুযুক্ত। সেতুর নীচে ২৫ হাজার ভোল্টের তার রয়েছে। নিরাপদে যাতায়াতের জন্য নতুন সেতু ব্যবহার করুন’।
পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই সেতু দিয়ে রিকশা, টোটোর মতো যানও চলতে দেওয়া হবে না।’’