ঘটনার পরে এলাকায় জটলা। সোমবার রহমতনগরে। নিজস্ব চিত্র
দুই প্রতিবেশীর মধ্যে মারামারির জেরে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। সোমবার দুপুরে বার্নপুরের হিরাপুর থানার রহমতনগর চাষাপট্টির ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম নবির হুসেন (৭৬)। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও চাপা উত্তেজনা রয়েছে। তাই এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত জলের কলে পাইপ লাগানোকে কেন্দ্র করে। এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ রাস্তায় বসানো জলের কল থেকে প্লাস্টিকের পাইপ লাগিয়ে নিজের ঘরে জল তুলছিলেন নবির হুসেনের পরিবারের সদস্যেরা। এই সময়ে প্রতিবেশী এক যুবক কলের সামনে নিজের স্কুটি দাঁড় করান। জল নিতে সমস্যা হওয়ায় নবির হুসেনের ভাইপো শাহিদ হুসেন ওই যুবককে স্কুটি সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই যুবক স্কুটি না সরিয়ে উল্টে তাঁর উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন দু’পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। নিহতের ছেলে আনোয়ার হুসেন পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন, কিছু ক্ষণ পরে, প্রায় ১৫ জনের একটি দল আচমকা তাঁদের বাড়িতে ঢুকে মারধর ও ভাঙচুর চালাতে শুরু করে। আনোয়ারের অভিযোগ, ‘‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওদের মধ্যে এক জন আমার বাবার মাথায় হকি স্টিক দিয়ে আঘাত করে। বাবা মাটিতে পড়ে যান। বাড়ির অন্যদের উপরেও আক্রমণ চালাতে থাকে।’’ মহিলাদেরও মারধর করা হয়, বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশের কাছে দাবি করেন, মিনিট দশেক ধরে চলেছে এই তাণ্ডব। নবির হুসেনের পরিবারের সদস্যদের চিৎকার শুনে তাঁরা ছুটে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরাই রক্তাক্ত অবস্থায় নবির হুসেনকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা তাঁকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই এলাকায় উত্তেজনা বেড়ে যায়। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হিরাপুর থানার পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, নবির হুসেনের পরিবারের উপরে যারা আক্রমণ চালিয়েছে, তারা নানা অসামাজিক কাজকর্মে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই সাধারণ বাসিন্দারা নিগ্রহের শিকার হন। পুলিশ জানায়, এখনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে তদন্ত চলছে।