কুলটিতে। নিজস্ব চিত্র
আলু-সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার আসানসোল মহকুমার একাধিক বাজারে অভিযান চালালেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা কৃষি বিপণন দফতরের রেগুলেটরি বিভাগের আধিকারিকেরা। তাঁরা শহর ও গ্রামাঞ্চলের আড়তগুলি ঘুরে দেখেন। কোনও ভাবেই যেন অস্বাভাবিক হারে দাম না নেওয়া হয়, সে বিষয়ে আড়তের মালিকদের সতর্কও করেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সেভালে অভিজিৎ তুকারাম বলেন, ‘‘অযথা মূল্যবৃদ্ধি রুখতে এই অভিযান শুরু হয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চালানো হবে।’’
কেন এই অভিযান? রাজ্যে সাপ্তাহিক ‘লকডাউন’ চালু হওয়ার পরেই আসানসোল মহকুমা থেকে আলু-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে। ক্রেতারা জানান, করোনার সংক্রমণ রুখতে ২২ জুলাই থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মহকুমার দেকান-বাজার খুলে রাখার নির্দেশ জারি হয়েছে। পাশাপাশি, সরকার ঘোষিত সাপ্তাহিক ‘লকডাউন’ চালু হওয়ায় অধিকাংশ বাজারে আলু-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উদ্যোগী হন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। জেলা কৃষি বিপণন দফতরের রেগুলেটরি বিভাগের আধিকারিকেরা জানান, মঙ্গলবার অভিযানের প্রথমদিন আসানসোল, বার্নপুর ও নিয়মতপুরের বাজার ঘুরেছেন তাঁরা। কাল, বৃহস্পতিবার বরাকর, রূপনারায়ণপুর, রানিগঞ্জের বাজারগুলিতে অভিযান হবে। এ দিনের পর্যবেক্ষক দলের প্রধান রেগুলেটেরি বিপণনের সচিব শুভ্রাংশু সিংহরায় বলেন, ‘‘এ দিন দামে বিশেষ কিছু অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি। তবে প্রত্যেককে সতর্ক করা হয়েছে, আলু-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অযথা মূল্যবৃদ্ধি না করতে।’’ তিনি জানান, মূল দেখার বিষয় হল— অস্বাভাবিক পরিমামে কোনও আড়তদার যেন আলু-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত করে না রাখেন। অস্বাভাবিক পরিমাণে মজুত করা হলেই অযথা দাম চড়া হয়। তা রোখাই মূল কাজ।
সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন আলুর (জ্যোতি) দাম কেজি প্রতি ২৫ টাকার বেশি নেওয়া যাবে না। এ দিন আসানসোলের বাজারগুলিতে আলুর দাম কিছুটা কমলেও ২৮ টাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও কেন আলুর দাম কেজি প্রতি ২৫ টাকার বেশি নেওয়া হচ্ছে? পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, আসানসোল মহকুমার বাজারে মূলত পূর্ব বর্ধমানের হিমঘর থেকে আলু আমদানি করা হয়। ব্যবসায়ীরা তাঁদের কাছে দাবি করেছেন, পূর্ব বর্ধমানে টানা ‘লকডাউন’ চলায় হিমঘর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু বের করে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে, জোগানের তুলনায় চাহিদা বেশি হওয়ায় খুচরো বাজারে দাম বেড়ে গিয়েছে। তবে অভিযান শুরু হতেই দাম কমতে শুরু করেছে বলে দাবি শুভ্রাংশুবাবুর। ধারাবাহিক অভিযান চললে দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে চলে আসবে বলে আশা তাঁর।