নিরাপত্তার দাবিবে বিক্ষোভে নার্সরা। নিজস্ব চিত্র
রোগিণীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুরে উত্তেজনা ছড়াল আসানসোল জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগিণীর মৃত্যু হয়েছে, অভিযোগে মৃতার পরিজনেরা কর্তব্যরত নার্সকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে মৃতার পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, কুলটির এলসি মোড় এলাকার বাসিন্দা ২৭ বছরে সন্তোষী চৌধুরীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শনিবার হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর শরীরে করোনার উপসর্গ থাকায় তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডেই রাখা হয়। তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কোভিড-হাসপাতালে পাঠানো হয়। রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ওই রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হয়। সোমবার সকালে তিনি মারা যান। এর পরেই তাঁর আত্মীয়-পরিজনেরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন। অভিযোগ, ওই সময়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঢুকে কর্তব্যরত নার্স শর্মিষ্ঠা দে-র উপরে চড়াও হন মৃতার আত্মীয়-পরিজনেরা। তাঁকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্তদের হাত ছাড়িয়ে কোনও রকমে পালিয়ে সহকর্মীদের খবর দেন ওই নার্স। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন জনা পঞ্চাশেক নার্স। তাঁরা পাল্টা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এ দিকে, নিরাপত্তার দাবি তুলে হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সরা প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের প্রশ্ন, আইসোলেশন ওয়ার্ডে কী ভাবে বহিরাগতেরা ঢুকতে পারল? ওই ওয়ার্ডে আরও কড়া নিরাপত্তার দাবি তোলেন তাঁরা। হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাসের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে লিখিত প্রতিবাদপত্র দেন। হাসপাতাল সুপার বলেন, ‘‘নার্সদের তরফে একটি অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশের কাছেও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগ জানানো হয়েছে। তবে মৃতার পরিজনেদের তরফে কোনও অভিয়োগ জমা পড়েনি।’’ সুপারের দাবি, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রোগিণী ‘মৃগী’ (এপিলেপ্সি) রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর লালারসের নমুনায় করোনার কোনও সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। তবে ওই রোগিণী মৃগী রোগে ভুগে না কি অন্য কোনও কারণে মারা গিয়েছেন, তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।