কমছে এডস আক্রান্তের সংখ্যা, দাবি সমীক্ষায়

ধারাবাহিক প্রচার অভিযান ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা হওয়ায় কুলটির লছিপুর চবকা যৌনপল্লিতে এডস আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই কমছে— এমনই দাবি করেছেন ন্যাশনাল এডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (ন্যাকো)এর সহযোগী একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসোনসোল ও রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share:

ধারাবাহিক প্রচার অভিযান ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা হওয়ায় কুলটির লছিপুর চবকা যৌনপল্লিতে এডস আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই কমছে— এমনই দাবি করেছেন ন্যাশনাল এডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (ন্যাকো)এর সহযোগী একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তারা। গত দু’শকে আক্রান্তের সংখ্যাটা পাঁচ শতাংশ থেকে কমে এক শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সরজিৎ জানা। তবে যৌনপল্লিগুলিতে এডস রোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরও বেশি নজরদারি চালানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এ নিয়ে ন্যাকোর আধিকারিকদের কাছে দরবারও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

শুক্রবার ছিল বিশ্ব এডস প্রতিরোধ দিবস। এই উপলক্ষে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এডস সচেতনতা প্রচার অভিযান চালানো হয়েছে। কুলটির লছিপুর চবকা যৌনপল্লীতে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উদ্যোগে একাধিক কর্মসূচি পালন করা হয়। ইসিএলের কুনোস্তরিয়া এরিয়া হাসপাতালের সহযোগিতায় রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্পতালুক সংলগ্ন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে এডস নিয়ে সচেতনতা শিবির হয়। ‘স্লাইড শো’র মাধ্যমে পুরো বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এ দিন এরিয়া হাসপাতাল থেকে এরিয়া কার্যালয়ের জিএম এ.কে ধর-সহ ইসিএলের অধিকর্তাদের সঙ্গে মিছিলে পা মেলায় ওই স্কুলের পড়ুয়ারা।

এ দিন লছিপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, সরজিৎ জানা-সহ আরও অনেকে। এক প্রশ্নের উত্তরে সরজিৎবাবু জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালে লছিপুর চবকা এলাকায় প্রথমবার এডস আক্রান্ত রোগীর খোঁজ চালানো হয়েছিল। তখনই পাঁচ শতাংশের সামান্য কিছু বেশি রোগীর সন্ধান মিলেছিল। তার পরে ঠিক হয়, এই এলাকায় নিয়মিত প্রচার অভিযান ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। ন্যাকোর উদ্যোগে তাঁদের প্রতিষ্ঠিত সংস্থা সেই কাজ শুরু করে। পরের কয়েকটি বছরেও এডস আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যায় বিশেষ কোনও হেরফের হয়নি। তবে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ‘ফিল্ড কর্মীরা’ নিয়মিত কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। তাঁর দাবি, এর ফলে আক্রান্তের সংখ্যাটা কমতে শুরু করে। গত বছরের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা এক শতাংশের সামান্য কিছু বেশি।

Advertisement

লছিপুর ও চবকায় প্রায় দেড় হাজার যৌনকর্মী রয়েছেন। প্রতিবছর এই যৌনকর্মীদের নমুনা সংগ্রহ করে অনুসন্ধান চালানো হয়। সরজিৎবাবু জানিয়েছেন, এডস আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হলেই সরকারি অর্থে আসানসোল জেলা হাসপাতালে এআরডি পদ্ধতিতে তাঁদের চিকিৎসা শুরু হয়। চবকাতেও একটি প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র গড়া হয়েছে। সপ্তাহে পাঁচদিন সেখানে চিকিৎসক বসেন। তবে এডস আক্রান্ত রোগীর অনুসন্ধান থেকে চিহ্নিতকরণ ও তাঁদের চিকিৎসা পদ্ধতিতে ন্যাকোকে আরও বেশি তৎপর হওয়া উচিত বলে মনে করেন সরজিৎবাবু।

এ দিকে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তারা যাই পরিসংখ্যান দিক না কেন এলাকার যৌনকর্মীদের একাংশের দাবি, এডস আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিনই বাড়ছে। পেশার স্বার্থে অনেকে রোগ লুকিয়ে খদ্দের ধরছেন। রোগ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে বহু যৌনকর্মীই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাজে সহযোগিতাই করেন না। ফলে সঠিক তথ্য পাওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement