উড়ে এসে বাড়ির চালে বসছে ময়ূর। নিজস্ব চিত্র
আউশগ্রামের জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়ে দেখা যাচ্ছে ময়ূরের দল। কখনও রাস্তার ধারে, কখনও খেতখামারে, কখনও আবার কারও বাড়ির পাঁচিলে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে তাদের। লোকালয়ে ময়ূরের আনাগোনা বাড়ায় খুশি গ্রামবাসী। ময়ূর রক্ষায় সতর্ক তাঁরা। শনিবার সকালে আউশগ্রামের দেবশালা পঞ্চায়েতের মৌকোটা গ্রামের বাসিন্দা হীরালাল ঘোষের বাড়ির পাঁচিলে বসে থাকতে দেখা যায় একটি ময়ূরকে। সম্প্রতি প্রেমগঞ্জ, রাঙাখুলাতেও ময়ূরের দল দেখা গিয়েছে, দাবি বনকর্মী এবং স্থানীয়দের একাংশের।
বছর দু’য়েক ধরে আউশগ্রামের আদুরিয়া জঙ্গলে ময়ূরের সংখ্যা বাড়ছে, দাবি বনকর্মীদের। গত বছর আদুরিয়ার জঙ্গলে ময়ূরের ডিম দেখা যায়। সেগুলি পাহারা দিয়েছিলেন বনকর্মীরা। ময়ূরের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য চোরাশিকার বন্ধ করা হয়েছে। জঙ্গলে ময়ূরদের নির্দিষ্ট কিছু ডেরা রয়েছে। সেই এলাকাগুলি নজরে রেখেছেন বনকর্মীরা। সে কারণেই জঙ্গলে ময়ূরের সংখ্যা বেড়েছে, দাবি বন দফতরের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সর্ষে খেতে শীতের সময় মাঝেমধ্যে ময়ূর দেখা যেত। খেতখামারে ও জঙ্গলের ধারে প্রায়ই ময়ূরের দেখা মেলে। তাদের ডাক শোনা যায়। কিন্তু বাড়ির চালে, পাঁচিলে ময়ূর উড়ে এসে বসছে, এমন ছবি এলাকায বিরল, বলছেন গ্রামবাসীর একাংশ। তাঁরা জানান, বন দফতরের পাশাপাশি তাঁরাও ময়ূরদের রক্ষা করতে সতর্ক রয়েছেন। কেউ যাতে তাদের শিকার করতে না পারে সে দিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখছেন তাঁরা।
মৌকাটা গ্রামের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া মুনমুন ঘোষ, প্রতীক পাল, সুমনা ঘোষেরা বলেন, ‘‘গত এক মাস ধরে প্রায়ই আমাদের গ্রামে ৩-৪টি ময়ূরের দলকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে। আমাদের ঘরের চালে, পাঁচিলে উড়ে এসে বসছে ওরা। ছবিতোলার জন্য কাছে ভয় পেয়ে উড়ে পালাচ্ছে। ময়ূর দেখতে বন্ধুরা আসতে চাইছে।”
বন দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, আদুরিয়ার জঙ্গলে অনুকূল পরিবেশ থাকায় ময়ূরের সংখ্যা বেড়েছে। ময়ূরের বংশবৃদ্ধিতে খুশি দফতর। জঙ্গলে বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কমায় তা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। বনকর্মীরা মনে করছেন, এই সময় জঙ্গলে খাবার কমে আসায় লোকালয়ের দিকে চলে আসছে ময়ূরের দল। সন্ধ্যার পরে নিজেদের ডেরায় ফিরে যাচ্ছে তারা। বন দফতরের আদুরিয়া বিটের আধিকারিক তাপস মাহাতো জানান, বন্যপ্রাণ রক্ষায়সতর্ক রয়েছেন তাঁরা।