প্রতীকী ছবি।
গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হল পূর্ব বর্ধমানে। সেই সঙ্গে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা থেকে ‘লকডাউন’ চলাকালীন পুরসভা ও পঞ্চায়েতকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল জেলা প্রশাসন। এলাকা থেকে নিয়মিত ভাবে কারা ভিন্ রাজ্য বা কলকাতায় যাতায়াত করছেন, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র পিছু গড়া ‘টাস্ক ফোর্স’কে তাঁদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য সংগ্রহের নির্দেশও দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ব্যবসার কাজে অনেকে নিয়মিত কলকাতা যাতায়াত করছেন। আবার পরিবহণ ব্যবসায় যুক্ত থাকায় অনেককে প্রায়ই ঝাড়খণ্ড বা ওড়িশা যেতে হয়। সম্প্রতি এই ধরনের কয়েকজনের শরীরে করোনার প্রমাণ মিলেছে। প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘ভিডিয়ো-বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এই ধরনের মানুষজনকে চিহ্নিত করে তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হবে। চিহ্নিত করা গেলে তাঁদের কোনও উপসর্গ দেখা দিলে, তা নজরে আসবে। তখন দ্রুত নমুনা সংগ্রহ থেকে পরীক্ষা করা যাবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি করোনা-আক্রান্তের বাড়ি-সহ আশপাশের তিন-চারটি বাড়ি নিয়ে এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হচ্ছিল। বহুতলের ক্ষেত্রে শুধু সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটকেই গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু রবিবার জেলায় এক সঙ্গে ৩৮ জন করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মেলার পরেই টনক নড়ে প্রশাসনের। সোমবার বিকেলে এক বৈঠকে ঠিক হয়েছে, গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বাড়ানো হবে। সেই মতো মঙ্গলবার এই ধরনের এলাকা ন্যূনতম ১০০ মিটার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কিছু এলাকায় বাঁশের ব্যারিকেড দিতে গিয়ে বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। বর্ধমান শহরের গোদায় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা পুলিশের কাছে দাবি করেন, রোগীর রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এসে গিয়েছে। এলাকার অনেকে অন্যের বাড়িতে কাজ করে বা টোটো চালিয়ে সংসার চালান। এখন পুরো এলাকা ঘিরে দিলে তাঁরা কাজ করবেন কী ভাবে, সেই প্রশ্ন তোলেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘কতটা এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হবে, স্থানীয় ভাবে গঠিত ‘টাস্ক ফোর্স’ তা ঠিক করবে। তবে ন্যূনতম ১০০ মিটার গণ্ডিবদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই সব এলাকায় কতগুলি বাড়ি, কত জনের বাস, কত দোকানঘর রয়েছে, অফিস আছে কি না— এ সব জানতে হবে। ব্যারিকেড সব রাস্তার মুখে ঠিকমতো হয়েছে কি না, তা-ও পঞ্চায়েত বা পুরসভাকে রিপোর্ট দিতে হবে।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় কোনও রকম ঢিলেমি চলবে না। কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হয়েছে।’’