লোকালয়ে হনুমানের আনাগোনা বাড়ছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
হনুমান, বাঁদরের উৎপাত বাড়ছে— দাবি করেছেন জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দারা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাঁরা স্থানীয় প্রশাসন থেকে বন দফতরে আর্জি জানিয়েছেন।
এলাকার বাসিন্দাদের ফোনে নাজেহাল অবস্থা, জানান বন দফতরের কর্মী-আধিকারিকেরাও। জেলা বনাধিকারিক মৃণালাকান্তি মণ্ডল জানান, আসানসোল-দুর্গাপুর খনি-শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে দৈনিক চারটির বেশি ফোন আসছে। তার ভিত্তিতে খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাঁর দাবি, অতীতে জঙ্গলে ঘেরা এই বিস্তীর্ণ এলাকায় হনুমান, বাঁদরের অবাধ বিচরণভূমি ছিল। জঙ্গল হারিয়ে যাওয়ায় খাবারের খোঁজে তারা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।
হনুমান, বাঁদরের আক্রমণে অনেকে জখম হচ্ছেন চিত্তরঞ্জন, রানিগঞ্জে। চিত্তরঞ্জনের নীলাদ্রি বিশ্বাসের দাবি, স্টেশন, আমলাদহি, রূপনারায়ণপুর মোড় এলাকায় দিনদিন বাঁদরের উপদ্রব বাড়ছে। তাদের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন অনেকে। মাসখানেক আগে তিনি জখম হন বলে জানান পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রা গ্রামের বাসিন্দা সাধন দাস। রানিগঞ্জের তিরাট পঞ্চায়েতের কলোনিপাড়ার বাসিন্দা সন্ধ্যা বাউড়ি, জয়দেব বাউড়িদের দাবি, হনুমান, বাঁদরের আক্রমণে বেশির ভাগ বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চালার একাংশ ভেঙেচুরে গিয়েছে। বাড়িগুলি সংস্কারের আবেদন জানিয়ে সম্প্রতি তাঁরা বিডিও-র (রানিগঞ্জ) কাছে স্মারকলিপি দেন। বিডিও অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অণ্ডাল ব্লকের দক্ষিণখণ্ড পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অনন্ত ঘোষ জানান, দক্ষিণখণ্ড গ্রামে বাঁদরের উৎপাত মাঝেমধ্যে বেড়ে যায়। এক বছর আগে বাঁদরের হামলায় ১০ জনের বেশি জখম হয়েছেন। গত পনেরো দিনের মধ্যে নির্মাণকাজ করার সময় তিন জন রাজমিস্ত্রি বাঁদরের হামলায় জখম হয়েছেন। তাঁদের খান্দরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার ব্যবস্থা করানো হয়েছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে রূপনারায়ণপুর রেঞ্জ কার্যালয়ে দু’টি, উখড়া ও দুর্গাপুরে একটা করে বাঁদরকে চিকিৎসা করার জন্য রাখা হয়েছে। সুস্থ হলেই তাদের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। ডিএফও মৃণালকান্তিবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘হনুমান-বাঁদরের আক্রমণের শিকার হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এবং হনুমান-বাঁদরকে যাতে কেউ মেরে না ফেলেন, সে জন্য সচেতনতা তৈরি করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।’’