উন্নয়নের কাজে আর শেষ কথা নন কাউন্সিলরেরা। কাজের বিষয়ে সহমত থাকতে হবে নাগরিকদেরও। এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে আসানসোল পুরসভা।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েও এর কারণ কী, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে বিরোধী দলগুলির মধ্যে। শহরের বিরোধী দলগুলির নেতারা অতীতে বারবার অভিযোগ করেছেন, লোকসভা নির্বাচনের পরে এই পুরসভা যে সব বুথ এলাকায় বিজেপি এগিয়েছিল, সেই সব এলাকায় উন্নয়নের কাজ করছে না। তৃণমূল সূত্রেও খবর, কাজ না করার অভিযোগ ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি উপলক্ষে নানা এলাকায় গিয়ে শুনতেও হয়েছে। এমনকি, এই কর্মসূচিতে নাগরিকেরা ফোন করেও অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও এ সব জল্পনা উড়িয়ে মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘ওয়ার্ডগুলির উন্নয়নের কাজে নাগরিকদের সরাসরি যোগদান থাকা উচিত। তাই আমাদের এই সিদ্ধান্ত।’’
ঘটনাচক্রে, এ বিষয়ে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন খোদ মেয়রই। সেই প্রস্তাব সমর্থন জানান শাসক, বিরোধী সব দলের কাউন্সিলররেরাও। এই সিদ্ধান্ত চলতি মাস থেকেই কার্যকর হবে বলেও জানিয়েছে পুরসভা।
কী ভাবে হবে ‘যোগদান’? মেয়র বলেন, ‘‘কাউন্সিলরেরা নিজেদের মর্জিমতো কাজের তালিকা বানাতে পারবেন না।’’ তিনি জানান, সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার জন্য কাউন্সিলরদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, উন্নয়নমূলক কাজের আগে নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কাউন্সিলরেরা। প্রত্যেকের মত নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজের তালিকা তৈরি করা হবে। ওই তালিকাকে সমর্থন করে বৈঠকে উপস্থিতি নাগরিকেরা সই করবেন। বৈঠকের প্রমাণ হিসেবে ছবিও তুলে রাখতে হবে! এর পরে ছবি ও নাগরিকদের সই করা কাজের তালিকা-সহ আবেদনপত্র পুরসভায় জমা করবেন সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর। তার পরেই শুরু হবে কাজ।
বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েও সিপিএম কাউন্সিলর তথা পুরসভার বাম পরিষদীয় নেতা তাপস কবি বলেন, ‘‘এটা নতুন কিছু নয়। অতীতে বাম পরিচালিত পুরবোর্ড নাগরিকদের মত নিয়েই উন্নয়নমূলক কাজ করত। তবে শেষমেশ এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’’ বিজেপির দলনেতা ভিগু ঠাকুর বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষের মতামত নিয়েই এলাকায় উন্নয়নের কাজ করি। মেয়রের সিদ্ধান্ত ভালই।’’ পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায়ের দাবি, ‘‘আসানসোল পুরবোর্ড যে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তা এই সিদ্ধান্তে প্রমাণিত।’’