মুখে নেই মাস্ক। মাথায় হেলমেট ছাড়াই সওয়ার মোটরবাইক, স্কুটিতে। মঙ্গলবার কালনার রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র।
স্বাস্থ্য-বিধি মেনে পুজো আয়োজন করতে হবে, সরস্বতী পুজোর উদ্যোক্তাদের নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। কালনায় বিভিন্ন মণ্ডপে তাই আয়োজকেরা মাস্ক বিলি, হাতে স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। কিন্তু পুজোর দিন সকাল থেকে বিভিন্ন মণ্ডপে ভিড় জমানো দর্শনার্থীদের অনেকের মধ্যেই সচেতনতার ছোঁয়া দেখা গেল না। অনেকেই এলেন মুখ আ-ঢাকা রেখে। শহরের রাস্তায় দেখা গেল হেলমেটহীন মোটরবাইক চালক, আরোহীদের দাপটও।
কালনায় সরস্বতী পুজো বছরের বড় উৎসব। বহু ক্লাব নানা দর্শনীয় মণ্ডপ গড়ে পুজো করে। থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজনও। এ বার করোনার জন্য অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন মণ্ডপে তরুণ-তরুণীদের ভিড় দেখা যায়। বেশিরভাগের মুখেই মাস্ক ছিল না। মোটরবাইকে হেলমেট না পরেই সওয়ার হন অনেকে। বিভিন্ন হোটেল-রেস্তরাঁয় ভিড় উপচে পড়ে। কিছু-কিছু জায়গায় সাউন্ডবক্সের উৎপাত ছিল বলে অভিযোগ নাগরিকদের একাংশের। জাপট-সহ কয়েকটি জায়গায় বসেছে মেলাও। তবে স্কুলগুলিতে এ বার পড়ুয়াদের ভিড় নেই।
মুখে মাস্ক নেই কেন? জাপটের একটি মণ্ডপে দাঁড়িয়ে কলেজ পড়ুয়া সুস্মিতা মণ্ডলের দাবি, ‘‘করোনা সংক্রমণ কমে গিয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়াও শুরু হয়েছে। তাই করোনা নিয়ে আগের মতো আর ভয় নেই। তা ছাড়া, মাস্ক পরলে তো সাজগোজ করা যাবে না। তাই পরিনি।’’ গোপাল মণ্ডল নামে এক যুবকের বক্তব্য, ‘‘বান্ধবীকে নিয়ে বছরখানেক কোথাও বেরোইনি। এখন করোনার হার কমেছে। তাই সরস্বতী পুজোর আনন্দটা মাটি করছি না। খাওয়াদাওয়া করব, ছবি তুলব। তাই মাস্ক পরিনি।’’
কালনা পুরসভার প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ জানান, প্রতিটি ক্লাবকে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, এমন বেপরোয়া আচরণে বিপদ বাড়তে পারে। কালনা মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইয়ের কথায়, ‘‘করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমেছে ঠিকই। তবে সব মানুষ তো টিকা পাননি। মাস্ক না পরে, ভিড় মণ্ডপে না যাওয়াই ভাল। বেপরোয়া মনোভাবের কারণে ফের সংক্রমণ বাড়তে পারে।’’