স্বাগত ২০২১: দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি শপিংমলের সামনে। ছবি: বিকাশ।
প্রচার ও প্রশাসনের নজরদারির পরেও বড়দিনে শিল্পাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে বেনিয়ম পুরোপুরি রোখা যায়নি। তাই আজ, শুক্রবার ইংরেজি নববর্ষের দিনে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। মাইকে ঘোষণার পাশাপাশি, ফ্লেক্স ঝুলিয়ে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানে মাইথনের পাশাপাশি, ভিড় জমে বার্নপুর রিভারসাইডের নেহরু উদ্যানেও। ২০১৬-এর ১ জানুয়ারি দুপুরে এই উদ্যানেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। সে বার থেকেই বিশেষ করে এ দিনে উদ্যানের নিরাপত্তায় পুলিশি ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়। এ বারও তার অন্যথা হবে না বলে পুলিশ জানিয়েছে। অন্য দিকে, মাইথনে প্রতিবারই স্নান করতে নেমে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, বাড়তি নজর থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ কমিশনারেটের তরফে জারি করা নিষেধাজ্ঞাগুলি বছরের প্রথম দিন সকাল থেকেই বলবৎ হবে বলে জানিয়েছেন ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বজিৎ মাহাতা। নিষেধাজ্ঞাগুলি কী? বিশ্বজিৎবাবু জানিয়েছেন, কোনও পর্যটনকেন্দ্রে মদ্যপানের অনুমতি নেই। ডিজে, সাউন্ডবক্স বাজানো যাবে না। পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। মেনে চলতে হবে কোভিড-বিধি। মাস্ক ছাড়া, পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি নেই। মাইথনের ক্ষেত্রে পুলিশের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নৌকায় বা স্পিডবোটে ভ্রমণের সময়ে প্রশাসনের নির্দেশমতো নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী চাপাতে হবে। লাইফ জ্যাকেট অবশ্যই পরতে হবে। নির্দেশ অমান্য করলে যাত্রী ও নৌকাচালক, উভয়ই দোষী সাব্যস্ত হবেন। ডিসিপি বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘এ সব নির্দেশ কঠোর ভাবে পালিত হবে। অন্য বারের তুলনায় এ বার বেশিসংখ্যক পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হচ্ছে।’’
এ দিকে, নতুন বছরের আগের দিন সন্ধ্যায় দুর্গাপুরে ভিড় খুব একটা লক্ষ্য করা যায়নি। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। বিভিন্ন পার্কেও তেমন ভিড় দেখা যায়নি। এ বার এমনটা হবে আঁচ করে বিশেষ কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে জানিয়েছে সিটি সেন্টারের একটি পার্ক কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, শুধু ডিজে, বক্সের ব্যবস্থা রাখাছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। দেখা গিয়েছে, দু’-এক জন খুদে নাচছে গানের তালে। শপিং মলগুলিতে তুলনায় ভিড় নজরে এসেছে। সিটি সেন্টারের ক্ষুদিরাম সরণির হোটেলগুলিতে জমজমাট পার্টির আয়োজন করা হয় অন্য বার। এ বার শুধু আমন্ত্রণের ভিত্তিতে সামান্য আয়োজন রাখা হয়েছে। এ দিন দুর্গাপুর ব্যারাজ, হুচুকডাঙা, কোথাও ভিড় দেখা যায়নি।
বড়দিনের অভিজ্ঞতায় বছরের প্রথম দিনেও খুব বেশি ভিড় হবে না বলে মনে করছে পুলিশ কমিশনারেট ও ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। তবুও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মাইথন জলাধারের রাস্তায় সাধারণের গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ জন্য পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের প্রবেশদ্বারে অস্থায়ী গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। মাইথন বনাঞ্চলে পিকনিক করতে আসা পর্যটকদের বন ও গাছপালা রক্ষা করার অনুরোধ করেছেন দুর্গাপুরের ডিএফও নীলরতন পন্ডা। পর্যটকদের বেশি জটলা না করে কোভিড-বিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছেন কোভিড ম্যানেজমেন্টের পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু।