সংস্কৃতি লোকমঞ্চে বৈঠকের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
ডেঙ্গি রুখতে সচেতনতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে চায় পুরসভা। ‘কী করবেন, কী করবেন না’ পরামর্শ দিয়ে লিফলেট ছাপিয়েছে পুরসভা। অথচ, সেই পুরসভা চত্বরেই মানা হচ্ছে না সচেতনতার পাঠ। ফেলে রাখা টায়ারে জল জমতে না পারার দিকে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে লিফলেটে। কিন্তু পুরসভার ফাঁকা জায়গাতেই ডাঁই করে রাখা টায়ারে জমছে জল।
দুর্গাপুর শহরে অজানা জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে পরপর। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে প্রতিদিনই নতুন করে রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তাঁদের অনেকের প্রাথমিক রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়লেও চূড়ান্ত পরীক্ষায় তার প্রমাণ মেলেনি কারও ক্ষেত্রে। তবে রাজ্যের অন্যত্র ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবরে আতঙ্কিত শহরবাসী। কোথাও জ্বরের প্রকোপের খবর পেলেই পুরসভার দল সেই এলাকায় গিয়ে কীটনাশক স্প্রে, পাড়ার সবার রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করছে। কিন্তু আগাম ব্যবস্থা সে ভাবে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ শহরবাসীর একাংশের। তাঁদের আরও অভিযোগ, শহরের বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আবর্জনা নিয়মিত সাফ হয় না। নর্দমায় বর্জ্য ও প্লাস্টিকের প্যাকেট জমে নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়ছে। ফলে, জমা জলে মশার উপদ্রব বাড়ছে। ধারাবাহিক ভাবে জঙ্গল সাফ করা হয় না। এমনকী, মশা নিধনে নিয়মিত কোনও কর্মসূচিও পুরসভার তরফে নেওয়া হয় না। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) লাভলি রায় জানান, আগে বছরে এক বার মশা মারার কীটনাশক ছড়ানো হতো। এখন দু’বার করে তা ছড়ানো হচ্ছে।
শহরে বাসিন্দা প্রায় ৬ লক্ষ। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, গত তিন বছরে সচেতনতা গড়তে ৯-১০ লক্ষ লিফলেট বিলি করা হয়েছে বাড়ি-বাড়ি। কিন্তু বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, তেমন কোনও লিফলেট এখনও তাঁদের হাতে পৌঁছয়নি। চার পাতার লিফলেটের শেষ পাতায় ‘কী ভাবে সাবধান হবেন’ বিভাগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ফেলে রাখা টায়ারে, ফুলের টবে, অব্যবহৃত পাত্রে জল জমতে দেবেন না।’ অথচ, পুরসভা চত্বরেই ফাঁকা জায়গায় ডাঁই করে রাখা হয়েছে পুরনো টায়ার। সেই সব টায়ারে বৃষ্টির জল জমেছে। শুধু তাই নয়, ফাঁকা চায়ের ভাঁড়, প্লাস্টিকের কাপেও জমা জল নজরে এসেছে। তবে এ দিন বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা শুরু হতেই মেয়র সেগুলি অন্যত্র সরানোর নির্দেশ দেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পুরসভার এক কর্মীর মন্তব্য, ‘‘একেই বোধহয় বলে, প্রদীপের নীচে অন্ধকার!’’