পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রকুমার মেহেরা।—নিজস্ব চিত্র
বয়স ৭৮ ছুঁইছুঁই। কাঁকসার কংগ্রেস নেতা ইন্দ্রকুমার মেহেরা ২০০৩-এ ভোটে দাঁড়ানো শুরু করেন। এ বারেও তিনি রয়েছেন ভোট ময়দানে। কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির ১০ নম্বর আসন থেকে তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন। এর আগে চার বারে জয়ের শিকে ছেঁড়েনি। তবে পরোয়া করেন না তিনি। সকাল-সন্ধ্যা অক্লান্ত ভাবে প্রচার করছেন।
পানাগড়ের বাসিন্দা ইন্দ্রকুমার জানান, লাবণ্য ঘটক, আনন্দগোপাল মুখোপাধ্যায়ের আমল থেকে তিনি কংগ্রেস করছেন। ২০০৩ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন পঞ্চায়েত সমিতির ২১ নম্বর আসন থেকে। বার বার ভোটে দাঁড়ানোর কারণ কী? তিনি বলেন, “জেতা-হারা বড় কথা নয়। মানুষের পাশে থাকতেই ভোটে লড়ি।” মানুষের পাশে যে ইন্দ্রকুমার সব সময়েই থাকেন, তা বোঝা যায় প্রতিবেশীদের কথায়। সূরয শর্মা, দেবাশিস মণ্ডলদের বক্তব্য, “যে কোনও দরকারে ওঁকে পাশে পাই আমরা।”
বাম আমলে দু’বার প্রার্থী হয়ে জিততে না পারলেও, জয়ের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এ বার পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা, দাবি প্রবীণ নেতার। তাঁর অভিযোগ, “২০১৮-য় ভোট লুট করেছিল তৃণমূল। এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। বেশি সময় নেই। তবে কর্মীদের নিয়ে প্রচার চালাচ্ছি।” শুধু নিজের জন্যই নয়, দলের অন্য প্রার্থীদের জন্যও প্রচারে বেরোচ্ছেন সর্বক্ষণের এই রাজনৈতিক কর্মী।
কংগ্রেসের কাঁকসা ব্লক সভাপতি পূরব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওঁর মতো লড়াকু নেতাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। ওঁর জন্য আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলও বলছেন, “উনি দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ। ওঁর লড়াই সত্যিই প্রশংসার।” তৃণমূলের ব্লক সহ-সভাপতি হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ভোট লুটের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে এই বয়সেও উনি ভোট ময়দানে। দলের প্রতি নিষ্ঠা না থাকলে, এটা হয় না।”
বস্তুত, এই নিষ্ঠার কারণেই পানাগড়ে থেকে গিয়েছেন ইন্দ্রকুমার। তাঁর ছেলে কর্মসূত্রে থাকেন চণ্ডীগড়ে। স্ত্রী-ও সেখানেই। পরিবার সেখানে চলে যেতে বললেও, এই প্রবীণের এক রা, “এখানে এত দিন রাজনীতি করেছি। আর এই বয়সে সব ছেড়ে যাব না।”