অদূরে নৌকা, মাইথনে নিখোঁজ মাঝি

চার পর্যটককে নৌকা-বিহারে নিয়ে গিয়েছিলেন এক মাঝি। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর পরেই বরাকর নদে তলিয়ে গেলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৩৫
Share:

উদ্ধারকাজ: বরাকর নদে তলিয়ে যাওয়া মাঝির খোঁজে তল্লাশি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের। বৃহস্পতিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী

চার পর্যটককে নৌকা-বিহারে নিয়ে গিয়েছিলেন এক মাঝি। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর পরেই বরাকর নদে তলিয়ে গেলেন তিনি। বুধবার বিকেলের ঘটনা। পুলিশ জানায়, বছর ২৬-র ওই মাঝি বাদল হাঁসদাকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরা। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মাইথন লাগোয়া বাথানবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবকের সন্ধান মেলেনি।

Advertisement

কী ভাবে ঘটল এই ঘটনা? এলাকার কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ মাইথনের ‘লেফটব্যাঙ্ক’ ফেরিঘাট থেকে চার জন পর্যটককে মাঝনদে থাকা সবুজদ্বীপে নৌকা বিহারে নিয়ে যান বাদল। পর্যটকদের সবুজদ্বীপের পাড়ে নামিয়ে তাঁদের কিছুটা এগিয়ে দিতে যান ওই মাঝি। কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে তিনি দেখেন, তাঁর নৌকাটি পাড় থেকে কিছুটা দূরে ভেসে গিয়েছে। ওই ব্যক্তি সাঁতরে নৌকাটি আনতে গিয়ে তলিয়ে যান।

বাদলের তলিয়ে যাওয়ার প্রায় আধ ঘণ্টা পরে লেফটব্যাঙ্কের অন্য মাঝিরা জানতে পারেন, ঘটনার কথা। খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাকি মাঝিরা দল বেঁধে নৌকা ও মোটর বোট চালিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। কিন্তু বাদলের খোঁজ পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সালানপুর থানা ও কল্যাণেশ্বরী ফাঁড়ির পুলিশ। খবর পাঠানো হয় জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সদস্যদের। ডুবুরি নামিয়ে শুরু হয় তল্লাশি। কিন্তু সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় উদ্ধারকাজ বন্ধ করতে হয়। বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফুটতেই ফের শুরু হয় উদ্ধারকাজ। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি বাদলের।

Advertisement

কিন্তু কী ভাবে তিনি তলিয়ে গেলেন, সে বিষয়ে ধন্দ রয়েছে। বাদলের ভাই অনন্তের দাবি, ‘‘দাদা অসম্ভব ভাল সাঁতার জানে। তাই নদে এ ভাবে তলিয়ে যাওয়াটা সম্ভব নয়। দাদাকে উদ্ধারের পরে ঘটনার তদন্তের জন্য থানায় অভিযোগ করব।’’ মাইথন বোটম্যান ট্রান্সপোর্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান রহমত আলিও বলেছেন, ‘‘বাদল সাঁতার জানত। তবুও কেন এই ঘটনা, তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মাইথন বোটম্যান ট্র্যান্সপোর্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটির অন্য সদস্যেরাও।

ধন্দ রয়েছে আরও। মাঝিদের একাংশ জানান, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, তা মোটেও বিপজ্জনক এলাকা নয়। এই ঘটনা সামনে আসার পরে অন্য আরও একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পর্যটকদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, ভাল সাঁতার জেনেও কী ভাবে এক জন মাঝি তলিয়ে গেলেন। সে ক্ষেত্রে নৌকায় পর্যটক-নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

বিষয়টি নিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘বাদল ভালই সাঁতার জানতেন বলে শুনেছি। বেশ কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্যও আমরা শুনেছি। পুলিশ এখন বাদলকে উদ্ধারের কাজ করছে। পরিবারের তরফে এ পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement