সেই আবাসন। নিজস্ব চিত্র
প্রায় দু’সপ্তাহের ব্যবধানে দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার শঙ্করপুরের একটি বহুতল আবাসন থেকে দু’টি ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দু’টি মৃত্যুই ঘটেছে মানসিক অবসাদ থেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে এই আবাসনের ষষ্ঠ তলা থেকে উদ্ধার হয় অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (৪৫) নামে বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক আধিকারিকের দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, তিনি আগে দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের আধিকারিক ছিলেন। কিছুদিন আগে অন্য একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের আসানসোল শাখার আধিকারিক হিসেবে যোগ দেন। দুর্গাপুর থেকে যাতায়াত করতেন। বিধাননগরে তাঁর বাড়ি হলেও কিছু দিন আগে ওই আবাসনে তিনি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, স্ত্রী ও মেয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর সঙ্গে থাকতেন না। তিনি মাঝে মাঝে ফ্ল্যাটে আসতেন। ঘটনার দিন সকালে ফ্ল্যাটে ঢোকার পরে রাত পর্যন্ত আর কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে আবাসিকেরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।
ওই আবাসনেরই চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে গত ৩১ মে সকালে সুস্মিতা ত্রিপাঠি (২৬) নামে এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর স্বামী একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। দম্পতির বছর তিনেকের সন্তান রয়েছে। আবাসিকেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, কয়েকমাস আগে ওই দম্পতি এই আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে আসেন। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সুস্মিতাদেবীর স্বামী বাজারে বেরিয়ে যান। ফিরে এসে স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। পুলিশের অনুমান, দু’জনেই কোনও ভাবে মানসিক অবসাদের শিকার। সে জন্যই তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন। দু’টি ঘটনারই তদন্ত চলছে।
এই আবাসনে পর পর অপমৃত্যুর ঘটনায় ‘অস্বস্তি’তে পড়েছেন অন্য আবাসিকেরা। ঘটনার জেরে অনেকের উপরে মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাসের পরামর্শ, ‘‘কোনও সমস্যা হলে অন্যের সঙ্গে, তা ভাগ করে নিতে হবে। পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে যে কোনও সমস্যা বা অবসাদ দূর করে মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।’’