ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
একটি বাড়ি থেকে তিন জনের দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড় রেলপাড়ের সারদাপল্লিতে ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মা নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তাঁর ছোট মেয়ে সিমরন বিশ্বকর্মা (২৩), শাশুড়ি সীতাদেবী (৭০) ও শ্যালকের ছেলে সোনু বিশ্বকর্মার (২১) দেহ উদ্ধার হয়। তিন জনকেই খুন করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পাঁচেক আগে ধনঞ্জয় ও তাঁর স্ত্রী প্রতিমা তাঁদের বড় মেয়ে নিকিতার বাড়ি, অসমে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই ঝাড়খণ্ড থেকে সারদাপল্লিতে এসেছিলেন সীতাদেবী ও সোনু। সিমরন সারদাপল্লির বাড়িতেই ছিলেন। তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে।
একই সীমানা পাঁচিলের মধ্যে রয়েছে ধনঞ্জয়ের ভাই রাজা বিশ্বকর্মার বাড়িও। রাজার স্ত্রী রিঙ্কু সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে জানান, সকাল ৯টা নাগাদ হেলমেট পরা এক ব্যক্তিকে ধনঞ্জয়ের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন। তাঁকে নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢোকেন সিমরন। রিঙ্কু বলেন, “আমি কাজ করছিলাম। ঘণ্টা দুয়েক পরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি, তিন জনের দেহ পড়ে রয়েছে।” রিঙ্কু বিষয়টি তাঁর স্বামী রাজা ও পড়শিদের জানান। খবর পেয়ে আসে কাঁকসা থানার পুলিশ এবং আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) কুমার গৌতম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ির শৌচাগারের বাইরে পড়েছিল সোনুর দেহ। দু’টি ঘরে খাটের উপরে ছিল সীতাদেবী এবং সিমরনের দেহ। রাজা বলেন, “সকাল সাড়ে ৭টায় কাজে বেরিয়েছিলাম। সেই সময়েও সিমরনের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কী করে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।” এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কোনও অশান্তির আওয়াজ ওই বাড়ি থেকে পাওয়া যায়নি।
এ দিকে, পুলিশ জানিয়েছে, তিন জনের দেহেই আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সিমরনের গলায় ওড়না ও সীতাদেবীর গলায় শাড়ি জড়ানো ছিল। ডিসি কুমার গৌতম বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, তিন জনকেই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায়। ফরেন্সিক বিভাগের কর্মীরা নমুনা সংগ্রহ করেন।
তবে কী কারণে এই ঘটনা, নির্দিষ্ট করে কার বা কাদের এই ঘটনায় হাত থাকতে পারে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে রাত পর্যন্ত কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ ও পরিবার। পরিবার সূত্রে খবর, ধনঞ্জয় ও প্রতিমা অসম থেকে সারদাপল্লির বাড়িতে ফিরছেন।