Asansol Municipal Corporation

অর্থের সঙ্কটে বন্ধ পুরসভার কাজ, বিতর্ক

বিরোধীদের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অন্যতম ‘ডেপুটি মেয়র’ অভিজিৎ ঘটক। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “বিরোধীরা কখনও কোনও গঠনমূলক কথা বলেন না। বরং, মিথ্যা প্রচার করেন।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২২ ০৯:০৭
Share:

আসানসোল পুরসভা।

চরম আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে আসানসোল পুরসভা। এর ফলে, পুর-এলাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ প্রায় থমকেই গিয়েছে। পুরসভার দৈনন্দিন খরচ জোগানোই দায় হয়ে উঠেছে বলে দাবি। এমনটাই জানা গিয়েছে পুরসভা সূত্রে। এই পরিস্থিতিতে নিজস্ব আয় বৃদ্ধির উপরে জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। তবে এই পরিস্থিতি এবং সঙ্কট মোকাবিলার পদক্ষেপ নিয়ে পুরসভাকেই বিঁধছে বিরোধীরা।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বোর্ড বৈঠক ও মেয়র পারিষদদের বৈঠকে বার বার অর্থ-সঙ্কটের প্রসঙ্গ উঠেছে। মেয়র বিধান উপাধ্যায়ও সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে দাবি করেছেন, “এটা ঠিক যে পুরসভায় চরম অর্থ-সঙ্কট রয়েছে। খুব জরুরি পরিষেবা ছাড়া পরিকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজ আপাতত কিছু দিন করা হবে না। কিন্তু এই সঙ্কট দীর্ঘস্থায়ী নয়। পুরসভার নিজস্ব আয় বৃদ্ধির উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।”

কোন পথে হবে এই আয়-বৃদ্ধি? পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমত, শহরবাসীর থেকে বকেয়া সম্পত্তি কর ও জলকর আদায় করা হবে। সূত্রের দাবি, এই মুহূর্তে সম্পত্তি করই বকেয়া রয়েছে প্রায় ১২৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া, কয়েক কোটি টাকার জলকরও বকেয়া। এই টাকা আদায় করতে পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডে বিশেষ শিবির বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। দ্বিতীয়ত, নতুন করে আরও কিছু কর বসিয়েও রাজস্ব বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তৃতীয়ত, পুর-এলাকায় বেসরকারি উদ্যোগে একাধিক আবাসন প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। ঠিক হয়েছে, এই সংস্থাগুলিকে প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে পুরসভায় নির্দিষ্ট হারে টাকা জমা দিয়ে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে। চতুর্থত, ১৯৯৭-এর পরে সম্পত্তি কর পরিমার্জন করা হয়নি। এ বার তা-ও করা হবে।

Advertisement

কিন্তু অর্থ-সঙ্কটের ফলে উন্নয়নের কাজ বন্ধের পাশাপাশি, নিয়মিত বেতন মিলবে কি না, তা নিয়েও সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন পুর-কর্মী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কেন এমন সঙ্কট? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুর-আধিকারিকের কথায়, “পুরসভার যাবতীয় কাজ এখন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আর্থিক অনুদানের উপরেই নির্ভরশীল। রাজ্য সরকারের অনুদানও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে।”

এ দিকে, এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও। প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির অভিযোগ, “বর্তমান পুরবোর্ড ক্ষমতায় বসার পরে থেকেই দান-খয়রাতির দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। সম্পত্তি কর আদায়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। কর বিভাগটাই পুরো অকেজো হয়েছ গিয়েছে। রাজ্যও আসানসোল পুরসভার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।” একই অভিযোগ করেছেন পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তিওয়ারিও। পাশাপাশি, কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা গোলাম সরওয়ারের অভিযোগ, “এই অর্থ-সঙ্কটের ফল ভুগছেন নাগরিকেরা। পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ থমকে যাওয়ায় তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন। অথচ, এর মধ্যে দিশা খুঁজতে ঠিক ভাবে পুর-বৈঠক হচ্ছে না।”

তবে বিরোধীদের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অন্যতম ‘ডেপুটি মেয়র’ অভিজিৎ ঘটক। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “বিরোধীরা কখনও কোনও গঠনমূলক কথা বলেন না। বরং, মিথ্যা প্রচার করেন। কোথাও কোনও সঙ্কট হয়ে থাকলে, তার সমাধানও সুষ্ঠু ভাবেই করা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement