মুক্তিপদ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
'দুয়ারে' নয়, একেবারে রোগশয্যার পাশে চলে এল সরকার। বিনা খরচে পূর্ব বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুরের মুক্তিপদ মণ্ডলের হৃদযন্ত্রের ধমনীতে স্টেন্ট বসানো হল। বিডিও এবং উপ-প্রধানের উদ্যাগে রোগযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেলেন মুক্তিপদ। লকডাউনের সময় থেকে কর্মহীন ছিলেন তিনি। বর্ধমান শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার এই অস্ত্রোপচার হয়েছে।
পেশায় গাড়ির চালক ৬৮ ব়ছরের মুক্তিপদ মণ্ডল পূর্ব বর্ধমানের সদর ২ নম্বর ব্লকের গোবিন্দপুর অঞ্চলের বসতপুরের বাসিন্দা। বুকে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করলে পরিজনেরা তাঁকে নিয়ে আসেন বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে উল্লাস এলাকার ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। মুক্তিপদকে পরীক্ষা করে দেখা যায়, হৃদযন্ত্রের দু'টি ধমনী প্রায় বন্ধ। সেই অস্ত্রোপচারের জন্য খরচ ছিল প্রায় দু’লক্ষ টাকা। দিন এনে দিন খাওয়া পরিবারের কাছে ওই পরিমাণ টাকা যোগাড় করা অসম্ভব। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ মুক্তিপদর কাছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে কি না তা জানতে চান। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই জেনে তাঁর ছেলে অমিয় মণ্ডলকে কার্ড তৈরির পরামর্শও দেওয়া হয়। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন, ওই কার্ড থাকলে নার্সিংহোমে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা করা যাবে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে নিখরচায় অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির মাধ্যমে রোগীর প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ধমণীতে স্টেন্ট বসানো হবে।
এর পরই মুক্তিপদর ছেলে অমিয় মণ্ডল বৈকুণ্ঠপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান জয়দেব বন্দোপাধ্যায়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন সদর ২ ব্লকের বিডিও সুবর্ণা মজুমদারের সঙ্গে। তিনি গুরুত্ব সহকারে তাঁর কর্মীদের নার্সিংহোমে পাঠান। বিডিও সুবর্ণা মজুমদার বলেছেন, ‘‘এটি একটি বর্ধিত ক্যাম্প। এর মাধ্যমে হাসপাতালের বিছানাতে শুয়েই হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পান মুক্তিপদ ও তাঁর পরিবার।" নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ‘‘ বিনা খরচে মুক্তিপদ মণ্ডলের ধমনীতে স্টেন্ট বসেছে। বৃহস্পতিবার মুক্তিপদর সফল ভাবে অপারেশন হয়।’’ মুক্তিপদর ছেলে অমিয় মণ্ডল বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিনা খরচে এত তাড়াতাড়ি অস্ত্রোপচার হবে, কল্পনা করতে পারিনি।’’ পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও প্রকল্পকে ধন্যবাদও জানান তিনি। বিপদ থেকে রক্ষা পেয়ে মুক্তিপদ বলেছেন, ‘‘অনেক দিন কাজ নেই। খুব বিপদে পড়েছিলাম। এই প্রকল্প আমায় ভরসা যোগাল।’’ জানা গিয়েছে, মুক্তিপদ এখন বিপন্মুক্ত।