খাঁচায় ভরা হনুমান। নিজস্ব চিত্র।
সপ্তাহ দু’য়েক ধরে হনুমানের তাণ্ডবে আতঙ্কে ভুগছিল ভাতারের বেলডাঙা গ্রাম। কারও মাথায়-হাতে কামড়, কাউকে ধাক্কা, কারও মোটরবাইকে ধাক্কা মারায় জখম হন প্রায় দশ জন। এক জনকে কলকাতার হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়। বর্ধমান বন বিভাগও প্রথম চেষ্টায় হনুমানটিকে ধরতে পারেনি। বুধবার বিকেলে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে হনুমানটিকে ধরেন বন দফতরের কর্মীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দু’য়েক আগে গ্রামের একটি বাগানে প্রায় ২০টি হনুমানের আনাগোনা শুরু হয়। বাড়িতে ঢুকে খাবার নিয়ে যাওয়া, বাড়ির চাল ভেঙে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। সপ্তাহ দু’য়েক আগে মানিক মল্লিক নামে গ্রামেরই এক বৃদ্ধ বাড়ির সদর দরজার সামনে বসে মুড়ি খাচ্ছিলেন। হনুমান তাঁর খাবার কেড়ে নেওয়ার সঙ্গে কামড়েও দেয় তাঁকে। রক্তাক্ত অবস্থায় ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বৃদ্ধকে। কয়েকদিনের মধ্যে রাস্তার কলে জল নেওয়ার সময়ে হনুমানের ধাক্কায় পড়ে জখম হন ছায়া মোদক নামে এক মহিলা। বিমল ক্ষেত্রপাল নামে এক জনের কোমড়ে কামড়ে দেয় হনুমান। পাশের বিজয়পুর গ্রামের ধান ব্যবসায়ী বোরহান শেখ মোটরবাইক নিয়ে যাওয়ার সময়ে হনুমানের ধাক্কায় পড়ে আঘাত পান। বেলডাঙা গ্রামের শুভেন্দু দেয়াসিকেও কামড়ে দেয় হনুমান। বুধবার সকালে দাঁত মাজার সময়ে নয়ন মাঝি নামে এক যুবকেরও দু’হাতে কামড়ে দেয় হনুমানটি। ভাতার হাসপাতাল হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সেখান থেকে কলকাতায় পাঠানো হয় তাঁকে।
গ্রামবাসী ছোট্টু প্রামাণিক, পথিক ঘোষ, সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, নূপুর মালিকেরা বলেন, ‘‘একটা হনুমানই বেশি অত্যাচার করছিল। রাস্তায় শান্তিতে বেরনো যাচ্ছিল না। হনুমানটি ধরা পড়ায় আমরা স্বস্তিতে।’’
বন দফতরের দাবি, উদ্ধার করা হনুমানটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ওকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তারপরে চিকিৎসকের পরামর্শমতো পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।