—প্রতীকী চিত্র।
উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ বেশির ভাগ টাকাই খরচ করতে পারেনি পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের নসরতপুর পঞ্চায়েত। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বরাদ্দ অর্থের ৮০ শতাংশ ৩১ মার্চের মধ্যে খরচ করতে না পারলে তা ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে জেলাশাসক বিজয় ভারতীর নির্দেশে গত সপ্তাহ থেকে প্রতিটি ব্লক ধরে সমীক্ষা শুরু করেছে কালনা মহকুমা প্রশাসন।
এখনও পর্যন্ত কালনা ১, ২ এবং পূর্বস্থলী ১ ব্লকের পঞ্চায়েতগুলিতে সরকারি বরাদ্দ কতটা কাজে এসেছে সে পরিসংখ্যান পেয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। বৈঠকে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধানেরা জানিয়ে দিয়েছেন ৩১ মার্চের মধ্যে কতটা বরাদ্দ খরচ করতে পারবেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নসরতপুর পঞ্চায়েতটি ‘আইএসজিপি’, ‘ফর্টিন ফিনান্স’-সহ নানা প্রকল্পে চার কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারেনি। ৩১ মার্চের মধ্যে ওই টাকা শেষ করা যাবে বলেও ইতিবাচক আশ্বাস দিতে পারেননি তাঁরা। পঞ্চায়েত প্রধান সীমা মণ্ডল বলেন, ‘‘একটু অসুবিধার কারণে টাকা খরচ করা যায়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’’
প্রধান স্পষ্ট ভাবে না বললেও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকা খরচ না হওয়ার পিছনে রয়েছে দলের ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’। কর্মীদের দাবি, শুরু থেকেই প্রধান, উপপ্রধানকে মেনে নিতে পারেনি দলের একটি গোষ্ঠী। বোর্ডের বয়স যত বাড়ে, তত ব্যবধানও বাড়তে থাকে। ফল, সাধারণ বৈঠকে কোনও প্রকল্পের টেন্ডার পাশ হলেও অর্থ-বৈঠকে আটকে যায় তা। কমিটির বেশির ভাগ সদস্য বেঁকে বসেন প্রকল্পের অনুমোদন দিতে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও নিজের বিধানসভা এলাকার এই পঞ্চায়েতের সমস্যা মেটানোর জন্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ১৭টি রাস্তার কাজ ছাড়া খুব বেশি পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এলাকার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘১৭টি মধ্যে ১১টি রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। বাকি ছ’টিরও হবে। এই কাজগুলিতে ৬০ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হবে। তবে বরাদ্দ অর্থের ৮০ শতাংশ হয়তো সময়ের মধ্যে খরচ করা আর সম্ভব হবে না।’’
কালনার মহকুমাশাসক সুমনসৌরভ মোহান্তি বলেন, ‘‘কেন এমন সমস্যা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’ স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আমি নসরতপুরের সমস্যার কথা জানি। বিডিওকে বলব টাকা ফেরত নিয়ে নিতে।’’ তবে ওই এলাকায় ‘গোষ্ঠী কোন্দলের’ কথা তিনি মানতে চাননি।