গৌরবাজার পঞ্চায়েতে। নিজস্ব চিত্র
সরকার এবং ক্ষমতাসীন দলকে কার্যত এক পঙ্ক্তিতে বসালেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। রবিবার দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের গৌরবাজার পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে তাঁর করা একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এমনটাই দাবি করছেন বিরোধীরা। যদিও বিষয়টিতে বিতর্ক দেখছেন না তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব।
এ দিন ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে মলয় গৌরবাজার পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন দলের ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায়, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী প্রমুখ। মাধাইগঞ্জ গ্রামের মন্দিরে পুজো দিয়ে কর্মসূচির শুরু করেন মলয়। সেখানেই উপস্থিত জনতার সামনে মন্ত্রীর বক্তব্য, “উন্নয়নের কাজগুলি সরকারের কাজ। কিন্তু করে একটি রাজনৈতিক দল, যারা ক্ষমতায় থাকে। আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় এনেছেন। তিনি করছেন। সেটাই মানুষকে বোঝাতে হবে।” পাশাপাশি, নাম না করে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, “সরকার দিচ্ছে বলে ভুল বোঝানো হচ্ছে। দিচ্ছে সরকার। কিন্তু করছে তৃণমূল। তৃণমূলের সরকার করছে।” পাশাপাশি, মন্ত্রী দাবি করেন, পড়শি ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অসমের তুলনায় এ রাজ্যের মানুষ বেশি সুবিধা পান।
এ দিকে, মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পরেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের মতে, মন্ত্রীর মন্তব্যে সরকার এবং ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে গণতন্ত্রে যে পার্থক্য থাকে, তা লঙ্ঘিত হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে প্রশাসনের কর্তাদের সামনে প্রশাসনিক বৈঠকে রাজনৈতিক কথাবার্তা বলেন। এ দিন ওঁদের দলের নেতার কথাতেও এটা স্পষ্ট হল, সরকার আর তৃণমূল একই।” বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, “সরকার আর দল যে এই রাজ্যে একই এবং তা প্রচার করেই ক্ষমতাসীন দল ভোট চায়, তা মন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হল। কেন্দ্রের সব প্রকল্পের নাম বদলে নিজের নামে চালিয়ে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার প্রশাসনিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ করেন। এ রাজ্যে প্রশাসন ও গণতন্ত্র নেই।’’ যদিও, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত বলেন, “বিরোধীদের কাজই হল, অপব্যাখ্যা করা। মন্ত্রী বলতে চেয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের আমলে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।”