স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। মঙ্গলবার আসানসোলে। ছবি: শৈলেশ সরকার।
সরকারের উন্নয়নের কথা মাইক হাতে বলছিলেন মন্ত্রী। বাধা এল শ্রোতাদেরই একাংশের তরফে। এত সব উন্নয়নের কিছুই তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি, এমন অভিযোগে মন্ত্রীর সামনে সরব হলেন তাঁরা।
মঙ্গলবার সকালে আসানসোলে নিজের এলাকায় এমন বিক্ষোভের মুখে পড়ে বক্তৃতা থামাতে হয় রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে। পরে যদিও তিনি দাবি করেন, “সেই অর্থে বিক্ষোভ হয়নি। বাসিন্দারা নিজেদের দাবির কথা জানিয়েছেন। আমি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছি।”
আসানসোলের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে দিলদারনগর এলাকায় এ দিন অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কার্ড বিলির অনুষ্ঠানের আয়োজন করছিলেন মলয়বাবু। নির্মাণ শ্রমিক, ভ্যান চালক-সহ বেশ কিছু পেশার লোকজন হাজির ছিলেন অনুষ্ঠানে। চলে আসেন এলাকার কিছু বাসিন্দাও।
কার্ড বিলির পরে বক্তৃতা শুরু করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “এখানে জেলা হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে। পুলিশ কমিশনারেট গঠন হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় অনেক রাস্তা তৈরি করেছি। জলের ব্যবস্থা করেছি। রাস্তায় আলো লাগিয়েছি।” এ কথা শুনেই সামনে বসে-দাঁড়িয়ে থাকা জনা কুড়ি পুরুষ-মহিলা প্রতিবাদ করেন।
তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় এই সব উন্নয়নের কোনও ছাপ তাঁরা দেখেননি। রাস্তায় আলো নেই। গরমে পানীয় জল মেলে না। নিয়মিত সাফ হয় না নর্দমা। গত পাঁচ বছর ধরে এমন নানা সমস্যায় ভুগছেন বলে দাবি করেন তাঁরা। মন্ত্রীর কাছে গিয়ে বিক্ষোভও দেখান। মন্ত্রীর সঙ্গীরা ওই বাসিন্দাদের থামানোর চেষ্টা করলেও সফল হননি। শেষে মলয়বাবু তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সুরাহা করার আশ্বাস দিলে বাসিন্দারা শান্ত হন।
এ দিন বিক্ষোভে সামিল হওয়া বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বস্তি এলাকার মানুষ অনেক সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাননি। তাই মন্ত্রী এ দিন যখন নানা রকম উন্নয়নের কথা বলছিলেন, চুপ করে থাকতে পারিনি।” বিজেপি-র আসানসোল জেলা সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তীর কটাক্ষ, “কোথাও কোনও কাজ না করে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা শুধু মুখেই উন্নয়ন করে চলেছেন। তাই এমন বিক্ষোভের মুখে তো ওঁদের পড়তেই হবে।”
কাজ না হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে মলয়বাবু বলেন, “প্রকল্পের কার্ড বিলির আগে আমি ওই এলাকা ঘুরে দেখেছি। অনেক কাজ হয়েছে। তবে এখনও কিছু বাকি রয়েছে। বাসিন্দারা সে কথাই বলতে এসেছিলেন।”