ভাঙচুরের পরে, পুঁইনিতে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ঢুকে মারধরের অভিযোগ উঠল কাটোয়ার পুঁইনিতে। জখম হয়েছেন দুই তৃণমূল কর্মী। গ্রেফতারও করা হয়েছে পাঁচ জনকে। পাল্টা ওই রাতে বাড়িতে ঢুকে মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগ করেছেন পুঁইনির বিজেপি কর্মীরাও।
সপ্তাহ দুয়েক ধরেই অশান্তি চলছে কাটোয়ার সরগ্রাম পঞ্চায়েতের পুঁইনিতে। কাটমানি ফেরতের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। অভিযোগ, দিন দশেক আগে কৈচরে দলীয় কার্যালয় থেকে ফেরার পথে পুঁইনিতে মোটরবাইক থামিয়ে মারধর করা হয় তৃণমূল কর্মী বংশধর প্রামাণিককে। তাঁর স্ত্রী সরগ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। ওই দিন মারধরের পরে তাঁর কছে থাকা কয়েক হাজার টাকাও লুট করা হয় বলে অভিযোগ। গত শনিবার গ্রামে আষাঢ় নবমীর পুজো চলাকালীন ফের ‘হামলা’ হয়। অভিযোগ, পুঁইনি পশ্চিমপাড়ায় বংশধরবাবুর বাড়িতে মত্ত অবস্থায় চড়াও হন এক দুষ্কৃতী। ইট ছোড়া, গালিগালাজ করা হয়। বংশধরবাবু বাড়িতে না থাকলেও ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও ছেলে। ইটের আঘাতে অ্যাসবেস্টসের চাল ভেঙে যায় বলেও অভিযোগ।
এই রাতে ‘হামলা’ হয় আরও তিন তৃণমূল কর্মীর বাড়িতেও। তাঁদেরই এক জন উদয় সরকারের অভিযোগ, রাত ৯টা নাগাদ ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগদান নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা চলছিল। তখনই জনা পনেরো দুষ্কৃতী রামদা, লাঠি, রড নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। ভাঙচুর, লুটপাটও করা হয়। সেখান থেকে বংশধরবাবুর বাড়িতে গিয়ে জলের লাইন কেটে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে মারধর করে স্থানীয় হারাধন মাজি ও উৎপল খাঁয়ের বাড়িতে বিজেপির লোকজন চড়াও হন বলে অভিযোগ। উৎপলবাবু ও হারাধনবাবুকে রাতেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উদয়বাবু মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানায় অভিযোগ করেন। তদন্তে নেমে কানু রায়, নানু রায়, অভিজিৎ বাগ, উৎপল দিগের ও রানা মল্লিক নামে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের এ দিন কাটোয়া আদালতে তোলা হলে বিচারবিভাগীয় হেফাজত দেন বিচারক।
এ দিনই তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে সুকেশ মাজি নামে এক বিজেপি কর্মীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। যদিও বিকেল অবধি কোনও অভিযোগ হয়নি, দাবি পুলিশের। কাটোয়ার বিজেপি নেতা অনিল দত্তের দাবি, ‘‘ওই গ্রামে তৃণমূল নেতাদের ইন্ধনেই ভাঙচুর হয়েছে। গ্রামের ছেলেদের ধরে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।’’
সরগ্রামের তৃণমূল পর্যবেক্ষক অরিন্দম বন্দোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘এলাকায় অশান্তি ছড়াতে বিজেপি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এ সব করছে।’’