খুলল আলমারি, মিড-ডে মিল চালুর আশ্বাস কালনার স্কুলে

অবশেষে মিড-ডে মিল চালুর আশ্বাস মিলল কালনা শহরের শশীবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। মাসখানেক আগে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষিকা। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন স্কুলের আটটি আলমারির চাবিও। তারপর থেকেই কার্যত অচলাবস্থা চলছিল ওই স্কুলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১১
Share:

অবশেষে মিড-ডে মিল চালুর আশ্বাস মিলল কালনা শহরের শশীবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে।

Advertisement

মাসখানেক আগে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষিকা। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন স্কুলের আটটি আলমারির চাবিও। তারপর থেকেই কার্যত অচলাবস্থা চলছিল ওই স্কুলে। প্রয়োজনীয় নথিপত্র বের করতে না পারায় আটকে গিয়েছিল ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা। বন্ধ হয়ে গিয়েছে শ’চারেক ছাত্রীর মিড-ডে মিল ও রান্নার কাজে নিযুক্ত কর্মীদের বেতনও। সপ্তাহখানেক আগে স্কুল বন্ধ রাখার কথাও বলেছিলেন পরিচালন সমিতির সদস্যেরা। এরপরেই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে প্রশাসন।

মঙ্গলবার দুপুরে শশীবালা স্কুলে যান জেলা স্কুল পরিদর্শক খগেন্দ্রনাথ রায়, মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ, পুরপ্রধান তথা কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। বন্ধ পড়ে থাকা আলমারিগুলির চাবি নিয়ে এসেছিলেন ওই প্রধান শিক্ষিকার এক আত্মীয়। প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলেন পুলিশ এবং পরিচালন সমিতির লোকজনেরাও। বিকেল পর্যন্ত স্কুলের বিভিন্ন আলমারির তালা খুলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বের করা হয়। কি কি নথি বের করা হল তার তালিকাও তৈরি হয়।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে জুলাই মাস থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে পরিচালন সমিতির সংঘাত শুরু হয়। সর্বশিক্ষা অভিযানের টাকার হিসেবে ২২ লক্ষ টাকার গড়মিল রয়েছে বলে প্রধান শিক্ষিকা স্নিগ্ধা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নানা স্তরে নালিশ জানায় স্কুল পরিচালন সমিতি। সর্বশিক্ষা মিশনের তরফেও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। স্কুলে আসা বন্ধ করে দেন ওই শিক্ষিকা। পরে ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি ফের কাজে যোগ দেন। এক মাস কাটতে না কাটতেই ২৬ ফেব্রুয়ারি পরিচালন সমিতি মিড-ডে মিলে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষিকা-সহ দুই গ্রুপ ডি কর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে। সম্প্রতি স্কুলের দরজায় একটি নোটিশ সেঁটে দিয়ে পরিচালন সমিতি জানিয়ে দেয় মিড-ডে মিল খাওয়ানো যাচ্ছে না। যে সমস্ত কর্মীরা রান্না তাঁদের বেতনও দেওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ না হওয়াই স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোরগোল পড়ে যায় স্কুলে। অনেক শিক্ষিকা দাবি করেন, এই টানাপড়েনে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। এরপরেই নিজে হাজির থেকে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন জেলা স্কুল পরিদর্শক। তালা খোলে স্কুলের।

এ দিন দুপুরে আলমারির চাবি নিয়ে স্কুলে হাজির থাকেন প্রধান শিক্ষিকার এক আত্মীয়। প্রশাসনের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে আলমারির তালা খুলে বের করা হয় ব্যাঙ্কের পাসবই, চেক বই, কন্যাশ্রীর ফর্ম, কর্মীদের বেতন, রেজিস্টার-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। আলমারি থেকে বের করা নথিপত্রের একটি তালিকাও তৈরি করা হয়। মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, ‘‘আলমারি খুলে দরকারি জিনিসপত্র বের করে তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পরে আলমারি সিলও করে দেওয়া হয়েছে। মাসখানেক পরে আবারও সব পক্ষকে নিয়ে বসে বাকি জিনিসপত্র বের করকে নিয়ম অনুায়ী হস্তান্তর করে দেওয়া হবে।’’ পরিচালন সমিতির সম্পাদক চন্দন সরকার বলেন, ‘‘আশা করা যাচ্ছে খুব দ্রুত স্কুলের মিড-ডে মিল চালু করা যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement