দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
গাড়ি-দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল অনঘ মান্না (২৩) নামে তৃতীয় বর্ষের এক ডাক্তারি পড়ুয়ার। তাঁর বাড়ি মেদিনীপুর শহরের বিধাননগরে। ওই ঘটনায় কলকাতার বাসিন্দা এক ডাক্তারি পড়ুয়া ও এক ইন্টার্ন জখম হয়েছেন। রবিবার রাতে দুর্গাপুরের শোভাপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শোভাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছিলেন অনঘ। রবিবার রাতে তিনি, তাঁর সহপাঠী কলকাতার নীলাভ রায় এবং কলেজের প্রাক্তনী তথা বর্তমানে ওই হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক অসমের স্বপ্নিল বোরা গাড়িতে করে ভাড়াবাড়ি থেকে হাসপাতালের দিকে আসছিলেন। কলেজের অদূরে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। পুলিশের অনুমান, গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। তাই নিয়ন্ত্রণ হারানোর পরে গাড়ির ধাক্কায় বিদ্যুতের একটি খুঁটি ও তিনটি গাছে ভেঙে যায়। গাড়ির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে তুবড়ে যায়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দৌড়ে আসেন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা। আসে পুলিশও। তিন জনকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা অনঘকে মৃত বলে জানান। মাথা-সহ শরীরের নানা অংশে গুরুতর চোট থাকায় নীলাভকে আইসিইউ-তে ভর্তি করানো হয়। স্বপ্নিল সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। নীলাভর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। স্বপ্নিলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি স্বপ্নিলের।
ঘটনাটি নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম ঘোষ বলেন, “পড়ুয়াদের হস্টেলে রাখার জন্য অভিভাবকদের কাছে আর্জি জানানো হয়। অধিকাংশ অভিভাবক হস্টেলেই ছেলে-মেয়েদের রাখেন। হস্টেলে রাত ১০টায় এক বার ‘রোল কল’ হয়। কেউ না থাকলে তাঁর খোঁজ শুরু হয়। তাঁকে হস্টেলে আনার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বাইরে থাকলে এই নিয়ন্ত্রণটা রাখা সম্ভব হয় না।”
পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (ট্রাফিক) তৌহিদ আনোয়ার বলেন, “আমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ঘটনায় প্রতিদিনই ব্যবস্থা নিচ্ছি। সচেতনতা প্রচারও চলছে। রাতে ফাঁকা রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটার অর্থ, সচেতনতার অভাব রয়েছে।”
এ দিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুর্গাপুরে এসেছেন অনঘের পরিবারের লোকজন। তাঁরা জানাচ্ছেন, রবিবার রাতেও পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল অনঘের। তার পরে দুর্ঘটনা ঘটে। অনঘ চালকের আসনের পাশে ছিলেন। অনঘের এক বোন রয়েছে।