প্রতীকী ছবি।
ভোটার, আধার কার্ড-সহ সব রকম পরিচয়পত্র আছে। কিন্তু সাত দশক ধরে বসবাস করার পরেও জমির মালিকানা নেই। বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ কাঁকসার মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজনের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েতসমিতির কর্মাধ্যক্ষও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ১৯৫০ সালে মতুয়াদের অনেকে কাঁকসায় এসে বসবাস শুরু করেন। কাঁকসার ৩ নম্বর কলোনিতে প্রায় ৭০টি পরিবার রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোট এলেই তাঁদের জমির পাট্টা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু ভোট পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুতি রাখা হয় না। তাঁদের দাবি, সরকারের তরফে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয় না। স্থানীয় বাসিন্দা রিনা দাসের অভিযোগ, ‘‘আমাদের ভাঁওতাবাজি দিয়ে রাখা হয়েছে। ৭০ বছর ধরে আমাদের এই অবস্থা। এখানে আসার পরে, আমাদের দাদু, বাবা মারা গিয়েছেন। আমাদেরও বয়স হয়েছে। আমরা আজও রয়ে গিয়েছি উদ্বাস্তু হয়েই।’’ তাঁর আশঙ্কা, ‘‘জমির কাগজপত্র না থাকায় এখান থেকে তুলে আমাদের অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে পরিবার পরিজনদের নিয়ে অতান্তরে পড়তে হবে।’’
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ (বিদ্যুৎ ও শিল্প) অজয় মজুমদার মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনি জানান, ১৯৫০ সালে তাঁর দাদু এখানে এসে বসবাস শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তাঁর রেশন কার্ড হয়। তাঁদের পরিবারের সকলের রেশন, ভোটার, আধার কার্ড আছে। তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ সাল থেকে আমি চেষ্টা করে করে হয়রান হয়ে গিয়েছি। প্রায় ৭০টি পরিবার রয়েছে। জমির পাট্টা নেই। এলাকায় গেলেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। আদৌ হবে কি না, আমার সন্দেহ হচ্ছে।’’ তিনি জানান, সব সরকারি কাগজপত্র রয়েছে। অনেকেই উচ্চশিক্ষিত। কেউ কেউ সরকারি চাকরি করেন। কিন্তু সকলের এক পরিস্থিতি। তিনি বলেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক আছে। তাই দ্রুত জমির পাট্টা দেওয়া দরকার।’’
প্রতিশ্রুতি পূরণ না করার অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী। তাঁর দাবি, ‘‘অজয়পল্লি, বসুধা, এগারো মাইল, দুবরাজপুর কলোনি-সহ নানা জায়গায় পাট্টা দেওয়া হয়েছে। সাধারণ সরকারি জমির উপরে বসবাসকারীরা পাট্টা পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কাঁকসার ৩ নম্বর কলোনি, ইজ্জতগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় সমস্যা হচ্ছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধিকৃত জায়গার মধ্যে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই সমস্যা হচ্ছে।’’