আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার জেলার নানা প্রান্তে দলের তরফে ‘জায়ান্ট স্ক্রিন’ টাঙিয়ে শোনানো হয়েছে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ। তবে, এই ‘ভার্চুয়াল সভা’য় কিছু ক্ষেত্রে পারস্পরিক দূরত্ববিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
কাঁকসার বামুনাড়ায় একটি মার্কেট কমপ্লেক্সের প্রেক্ষাগৃহের ভিতরে মমতার ভাষণ শোনার সময়ে উপস্থিত নেতা, কর্মীদের ‘মাস্ক’ পরে থাকতে দেখা গেলেও, দূরত্ববিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘প্রেক্ষাগৃহে ঢোকার মুখে সবাইকে ‘মাস্ক’ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হয়। সবার বসার জন্য নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তা হলে দূরত্ববিধি ভঙ্গ হয় কী করে!’’
ন’ডিহা, রায়ডাঙা প্রভৃতি জায়গায় দিনটি পালন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন তৃণমূলকর্মীরা। দুর্গাপুর শহরের গোপালমাঠে প্রেক্ষাগৃহে বিশাল স্ক্রিনে দলনেত্রীর বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করা হয়। উপস্থিত ছিলেন পুরসভার মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি বিল্বেশ্বর মণ্ডল প্রমুখ। একই ছবি দেখা যায় কাঁকসার দার্জিলিং মোড়, লালবাবা আশ্রম মাঠেও। দিনটি পালন করে দুর্গাপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং সংগঠনের দুর্গাপুর মাইকেল মধুসূদন মেমোরিয়াল কলেজ শাখা। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়া, শ্রীকৃষ্ণপুর, নাকড়াকোঁদা, কালীপুর, বাঙ্গুরি, পানশিউলি, প্রতাপপুর, মাধাইপুর, লবণাপাড়া-সহ নানা এলাকার বুথে-বুথে দিনটি পালিত হয়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এ সব এলাকায় দূরত্ববিধি মানা হয়নি। যদিও দলের ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।’’
আসানসোলের অগ্নিকন্যা ভবনের মুক্তমঞ্চের অনুষ্ঠানে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সেখানে দূরত্ববিধি মানা, ‘মাস্ক’ ও ‘ফেস শিল্ড’ পরে থাকতে দেখা গিয়েছে বেশির ভাগ নেতা, কর্মীদের। জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘দলের সদস্য-সমর্থকদের আগাম জানানো হয়, ‘মাস্ক’ ও ‘ফেস শিল্ড’ ছাড়া সভায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’’ আসানসোলের আপকার গার্ডেনে কর্মসূচি পালন করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক। আসানসোল বাজার এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে ছিলেন দলের জেলা কো-অর্ডিনেটর ভি শিবদাসন।
কুলটি ব্লকের বরাকর ও ডিসেরগড়েও দিনটি পালিত হয়। ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্যের নেতৃত্বে দিনটি পালিত হয়। সালানপুর ব্লকের রূপনারায়ণপুরে ও বারাবনির পানুড়িয়ায় কর্মসূচির সূচনা করেন যথাক্রমে দলের ব্লক সভাপতি মহম্মদ আরমান ও অসিত সিংহ। কিছু এলাকায় বৃষ্টির কারণে সভার কাজে কিছুটা বিঘ্ন ঘটে বলে জানা গিয়েছে। আসানসোল মহকুমার বেশ কিছু জায়গায় দূরত্ববিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির অবশ্য দাবি, ‘‘যাবতীয় সতর্কতা মেনেই সভার কাজ হয়েছে।’’
পাশাপাশি, কংগ্রেসও দিনটি বেনাচিতি-সহ জেলার নানা প্রান্তে দিনটি পালন করে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল ও দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সহযোগিতায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে কংগ্রেস। যোগ দেন, এআইসিসি সদস্য দেবেশ চক্রবর্তী, প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য সুদেব রায় প্রমুখ। অন্য একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দলের জেলা সভাপতি তরুণ রায় বলেন, ‘‘বাম সরকারের আমলে সেদিন ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী নিহত হয়েছিলেন। রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হলেও শহিদ পরিবারগুলি বিচার পায়নি।’’ অনুষ্ঠান শেষে পথচলতি মানুষজনকে ‘মাস্ক’ পরানো হয়।