এমনই হাল বিভিন্ন বাড়ির। নিজস্ব চিত্র
কোথাও বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে আবাসনের একাংশ। কোথাও বা পড়েছে চাঙড়ও। এমনই হাল আসানসোল পুরসভার নানা এলাকার বহু বাড়ি, আবাসনের। শহরবাসীর একাংশের দাবি, দ্রুত এই ধরনের বাড়িগুলি নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু শরিকি বিবাদের জেরে অনেক ক্ষেত্রেই সেই ব্যবস্থা কত দূর নেওয়া সম্ভব হবে, তা নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্ট অনেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাসখানেক আগের বৃষ্টিতে পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাজার এলাকার একটি বহু পুরনো বাড়ির একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। নীচে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন জখমও হন। এর পরেই এলাকাবাসীর একাংশ ওই পুরনো আবাসনের বিপজ্জনক অংশ ভেঙে ফেলা বা সংস্কারের দাবি জানান। বাড়ি ভেঙে বিপত্তির ঘটনা শহরে শুধু এই একটিই নয়। আগেও আসানসোল বাজার, নিয়ামতপুর, রানিগঞ্জের নানা এলাকায় জীর্ণ আবাসন ভেঙে জখম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, কোথাও এমন বিপত্তি ঘটলে কয়েক দিনের জন্য পুরসভার নড়াচড়া দেখা যায়। কিন্তু বিষয়টি থিতিয়ে যেতেই ফের আগের অবস্থায় ফিরে আসে সব কিছু। উদাহরণ হিসেবে, তাঁরা আসানসোলের টিপি মার্কেট এবং লাগোয়া এলাকার জীর্ণ আবাসনের কথা জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা তথা ফুটপাতের দোকানদার মনোজ সাউয়ের ক্ষোভ, ‘‘আবাসনের অংশ মাথায় ভেঙে পড়তে পারে যে কোনও সময়। প্লাস্টিকের ছাউনি টাঙিয়ে ব্যবসা করি। কিন্তু বিপদ ঘটলে তাতেও রক্ষা পাওয়া যাবে কি?’’
তবে আসানসোল পুরসভা জানায়, আসানসোল বাজারের ওই ঘটনার পরেই ইঞ্জিনিয়ারেরা জীর্ণ বাড়ি, আবাসনের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। পুরসভার সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডল জানান, এ পর্যন্ত রানিগঞ্জে ৪২টি, কুলটিতে প্রায় ৩০টি, আসানসোলে প্রায় ২৪টি জীর্ণ বাড়িকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
সুকোমলবাবু জানান, মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির নির্দেশে ওই বাড়িগুলির মালিকদের বরো স্তরে শুনানিতে ডেকে বাড়ি সংস্কারের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কার করা না হলে পুরসভা আইনি পদক্ষেপ করবে, এমনও জানানো হচ্ছে।
তবে, এর পরেও নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পুরসভার কর্তারা জানান, বাস্তবে দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি বাড়ির মালিকানা সংক্রান্ত শরিকি বিবাদ রয়েছে। সেই বিবাদ অনেক ক্ষেত্রেই আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। ফলে, শরিকেরা কেউই বাড়ি সংস্কার করতে চাইছেন না। বিষয়গুলি আদালতের বিচারাধীন হওয়ায় পুরসভার তরফেও সে ভাবে কোনও পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না।
এই পরিস্থিতিতে জীর্ণ বাড়িগুলির ভবিষ্যৎ কী হয়, কোন পথে সমস্যার সমাধান করে পুরসভা, সে দিকেই তাকিয়ে শহরবাসীর একাংশ।