—প্রতীকী চিত্র।
ক’বছর আগেই রাজ্য আম উৎসবে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল পূর্বস্থলীর হিমসাগর। পূর্বস্থলী ২ ব্লক জুড়ে ল্যাংড়া, মধুকুলকুল, গোলাপখাস-সহ প্রায় ২০টির বেশি প্রজাতির আম চাষ হয়। তবে এ বার বেশির ভাগ গাছে আম নেই। যেটুকু আম আছে, তা এলাকায় জোগান দিতেই ফুরিয়ে যাবে, রফতানির মতো কিছুই থাকবে না বলে জানান চাষিরা। এত কম ফলনে কী ভাবে বাগানের খরচ তুলবেন সেই নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাঁরা।
এই ব্লকে অনেকে চাষের জমিতে গাছ লাগিয়ে তৈরি করেন আমবাগান। অনেকে আবার বাগান চুক্তিতে দিয়ে বছরে মোটা টাকা রোজগার করেন। সেই আম চাষিরা বিক্রি করেন পাইকারি বাজারগুলিতে। সেখান থেকে ট্রাকে করে বিহার, ওড়িশার মতো রাজ্যে পৌঁছে যায় এখানকার আম। এ ছাড়া ট্রাকে করে আঁটিও কিনে নিয়ে যান ভিন্ রাজ্যের নার্সারি মালিকেরা।
আম চাষিরা জানিয়েছেন, “এ বার বেশির ভাগ গাছে মুকুল আসেনি। অনেকের গাছে মুকুল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে আমের উৎপাদন তলানিতে।” ভাসান শেখ নামে এক আম চাষি বলেন, “নিজের বাগানের পাশাপাশি কিছু গাছ চুক্তিতেও নিয়েছি। সব মিলিয়ে আমার প্রায় এক হাজার আম গাছের মধ্যে ফলন হয়েছে মাত্র ২০টিতে। কী ভাবে বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ-সহ নানা খরচ উঠবে, ভেবে পাচ্ছি না।”
কেন আমের ফলন কম? উদ্যানপালন বিভাগের রাজ্যের এক আধিকারিক পলাশ সাঁতরা বলেন, “আমের ফলন এক বছর বেশি হয়, পরের বার কম হয়। এ বার কম ফলনের বছর। পাশাপাশি এ বার তাপমাত্রা মাঝে অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় বহু ছোট ছোট আম গাছ থেকে ঝরে পড়েছে। অনুকূল পরিবেশ পেয়ে ম্যাঙ্গহুপার নামে ক্ষতিকারক একটি পোকাও আমের রস শুষে খেয়েছে। চাষিরা সময়ে এই পোকা দমন করতে পারেননি। সব মিলিয়ে ফলন এ বার বেশ কম।” তিনি আরও জানান, অনেক সময় গাছের পরিচর্যা ঠিকঠিক করেন না অনেক চাষি। নিয়মানুযায়ী, চাষের পরে গাছের মাটি আলগা করে সার দিতে হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ডাল কেটে ফেলতে হয়। এ ছাড়াও পোকা দমনে সময়ে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। সেখানে ঘাটতি থাকলেও তার প্রভাব পরে ফলনে।
পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এলাকার আমের খ্যাতি রয়েছে রাজ্য জুড়ে। তবে এ বার ভাল ফলন না হওয়ায় আমপ্রেমীরা পর্যাপ্ত আম পাবেন না।”