রবিবার রওনা হলেন শ্যামাপদ শর্মা। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র।
ঘুগনি বিক্রির টাকা থেকে কিছু টাকা সরিয়ে রাখাটা অভ্যাস পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের মিলনপল্লির ভাড়া বাড়িতে থাকা শ্যামাপদ শর্মার। কারণ, প্রায় প্রতি বছর তিনি কোনও না কোনও বিশেষ বার্তা প্রচারের লক্ষ্যে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। রবিবার তিনি যুদ্ধবিরোধী বার্তা প্রচার করতে রওনা হলেন পুলওয়ামার উদ্দেশে। সফর শেষ হবে লাদাখে।
রবিবার সফর শুরুর আগে শ্যামাপদ জানান, ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর সময়েই তিনি পরিকল্পনা করেন, যুদ্ধবিরোধী বার্তা প্রচারের লক্ষ্যে বেরিয়ে পড়বেন। সে মতো এ দিন তিনি সেকেন্ডারি থেকে রওনা দিলেন পুলওয়ামার উদ্দেশে।
শ্যামাপদ জানান, যাওয়ার পথে বুদ্ধগয়ায় মন্দিরে পুজো দিয়ে শান্তি প্রার্থনা করবেন। এর পরে দিল্লি হয়ে যাবেন পুলওয়ামা। সেখানে জঙ্গিহানায় নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন। তার পরে যাবেন লাদাখে। বাড়ি ফিরতে চার-পাঁচ মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ঘুগনি বিক্রির আয় থেকে সরিয়ে রাখা সামান্য অর্থ এবং যাত্রাপথে পথচলতি মানুষের সহযোগিতা নিয়েই তিনি অভিযান শেষ করবেন
বলে জানান।
শ্যামাপদর আসল বাড়ি বাঁকুড়ার সোনামুখীর রাধামোহনপুরে। তাঁর এমন যাত্রা অবশ্য নতুন নয়। বাঁকুড়ায় থাকাকালীন ২০০৭-এ পোলিয়ো মুক্ত দেশ গড়ার বার্তা নিয়ে দিল্লি যাত্রা করেছিলেন। ফেরেন মাস দেড়েক পরে। সেই শুরু। তার পর থেকে প্রতি বছর তিনি বেরিয়ে পড়েন। পরে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে দুর্গাপুরে ডিএসপি টাউনশিপের সেকেন্ডারি রোডে ভাড়া থাকতে শুরু করেন। সেকেন্ডারি বাজারে তাঁর ঘুগনির দোকান। তবে এখন ভাড়া থাকেন মিলনপল্লিতে। ২০১৯-এ সাইকেল নিয়ে মহারাষ্ট্র গিয়েছিলেন। করোনা পরিস্থিতির জন্য মাঝে দু’বছর সাইকেল-সফর বন্ধ ছিল।
শ্যামাপদর স্ত্রী অসীমা একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী। তিনি বলেন, “দিল্লি ঘুরে আসার পরে ভয় ভেঙে যায়। তার পর থেকে সাইকেল সম্বল করে প্রতি বছর উনি বেরিয়ে পড়েন।” আর শ্যামাপদ বলেন, “যুদ্ধের প্রভাবে সবথেকে বেশি ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে। তাই যাত্রাপথে ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’ এই বার্তা প্রচার করতে করতে এগিয়ে যাব।”