মেয়ের অন্নপ্রাশন দেখা হল না যুবকের

মেয়ের অন্নপ্রাশনের দিন পাঁচেক আগে, শনিবার সকালে কাজে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন রাকেশ। ওই দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর এক আত্মীয় নিমাই রায়েরও।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

ভাতার শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৯
Share:

শোকার্ত। নিজস্ব চিত্র

মেয়ের অন্নপ্রাশন হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার। তার আয়োজন প্রায় সম্পূর্ণ। শ’তিনেক লোকের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে। রান্নার জন্য উনুন তৈরি থেকে আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ, সব নিজেই করছিলেন ভাতারের এরুয়া গ্রামের রাকেশ রায়। জোগাড় করে রাখা হয়েছিল কাঠও। সেই কাঠেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হল তাঁর।

Advertisement

মেয়ের অন্নপ্রাশনের দিন পাঁচেক আগে, শনিবার সকালে কাজে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন রাকেশ। ওই দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর এক আত্মীয় নিমাই রায়েরও। এ দিন দুপুরে ওই পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, শোকস্তব্ধ সকলেই। পাড়ার শ’দেড়েকের পরিবারের কেউ কাজে যাননি। যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁরাও দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফিরে এসেছেন। রাকেশের মাটির বাড়ির সামনে ভিড় করেছেন পড়শিরা। তাঁর মা নমিতাদেবী কেঁদেই চলেছেন। মাস সাতেকের শিশুকন্যাকে কোলছাড়া করতে চাইছেন না রাকেশের স্ত্রী রিম্পা। আকস্মিক দুর্ঘটনায় তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শান্ত স্বভাবের ছেলে হিসাবে পরিচিত ছিলেন রাকেশ। বছর দুয়েক আগে ভাতারেরই নতুনগ্রামে তাঁর বিয়ে হয়। সন্তান হওয়ার পরে মাস দুয়েক আগে স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। মেয়ে রানির অন্নপ্রাশনে গোটা পাড়াকে ভোজ খাওয়ানোর ইচ্ছে ছিল তাঁর। রাকেশের বাবা ভগীরথবাবু জানান, এখন আর সেই অনুষ্ঠান নিয়ে ভাবার পরিস্থিতি নেই। তিনি শুধু বলেন, “মেয়েটা রাকেশের জীবন ছিল।” স্থানীয় বাসিন্দা পলাশ সাধু বলেন, “কয়েক দিন ধরে শুধু মেয়ের অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানের কথাই বলত। মেয়ের ভাত খাওয়া রাকেশের দেখা হবে না, কেউ ভাবতেই পারছি না!’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement