প্রতীকী চিত্র।
শালপাতার ক্লাস্টার তৈরি হবে কাঁকসা ব্লকে। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহের প্রশাসনিক সভা থেকে এই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শালপাতার নানা সামগ্রী তৈরির সঙ্গে জড়িত এই ব্লকের বাসিন্দারা বাজারের সমস্যা থাকার কারণে ভাল দাম পান না। পাশাপাশি, রয়েছে প্রযুক্তিগত অভাব। এই ঘোষণার ফলে তাঁরা উপকৃত হবেন বলেই আশা প্রকাশ করেছেন।
কাঁকসা ব্লকের নানা প্রান্তে রয়েছে জঙ্গল। সেখান থেকে শাল ও কেন্দু পাতা সংগ্রহ করে ব্লকের জনজাতিদের বেশির ভাগই রুটি-রুজির ব্যবস্থা করেন। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ব্লকে জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামের সংখ্যা ৭৫টি। ত্রিলোকচন্দ্রপুর, মলানদিঘি, গোপালপুর, বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে বেশির ভাগ মানুষই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। পাশাপাশি, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া বাসিন্দাদের একাংশও এই কাজের সঙ্গে যুক্ত।
এলাকাবাসী জানান, জঙ্গল থেকে শালপাতা সংগ্রহ করে কুঁচি কাঠি দিয়ে সেলাই করে রোদে দু’দিন শুকনো হয়। তার পরে মহাজনেরা গ্রামে এসে সেগুলি কেনেন। বাসিন্দারা জানান, এক হাজার পাতা বিক্রি করতে পারলে মাত্র আড়াইশো টাকা মেলে। সেই পাতা মহাজনেরা যন্ত্রের মাধ্যমে আরও ভাল ভাবে সেলাই করে বাজারে বিক্রি করেন। কাঁকসার কুলডিহার বাসিন্দা সুমিত্রা টুডু বলেন, ‘‘পরিবারের তিন জন মহিলা এই কাজ করেন। তিন জনে এক হাজার পাতা তৈরি করে বিক্রি করলে যে টাকা মেলে, তাতে পোষায় না।’’ একই কথা বলেন ত্রিলোকচন্দ্রপুরের বড়বাঁধের চুরকি হাঁসদাও। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মূল সমস্যা সরাসরি বাজারে বিক্রি করতে না পারা। এর জন্য যন্ত্র বা প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ দরকার।’’
ওই মহিলারা জানান, সরকার শালপাতার সামগ্রী ব্যবহারের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে তাঁরা উপকৃত হবেন বলে জানান ওই মহিলারা। কী ভাবে এই ক্লাস্টার কাজ করবে? কাঁকসা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আগে থেকেই বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে পাতা তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। বেশ কিছু যন্ত্রও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিক ভাবে পরিচালনার অভাবে সেগুলি প্রায় সবই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো আমরা দ্রুত পদক্ষেপ করব। শালপাতা বাজারজাত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি, যন্ত্র পরিচালনার জন্যও এই কাজে যুক্তদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’