বর্ধমানের শালবাগান এলাকায় মহাত্মা গাঁধীর মূর্তিতে সানগ্লাস পরিয়ে দিচ্ছেন বিনয় রায়। নিজস্ব চিত্র
জাতির জনক মহাত্মা গাঁধী সকলের কাছেই ‘বাপু’। তবে, এক জন তাঁকে ‘কাকু’ বলে ডাকেন। এক জন বলতে বর্ধমানের বিনয় রায় ওরফে লেদু। এখানেই শেষ নয়, গাঁধীজির মূর্তিতে ভালবেসে সানগ্লাসও পরিয়ে দিয়েছেন সেই লেদু। সবটাই করেছেন মদের নেশার ঘোরে। তাতেই বিপত্তি। বর্ধমান শহরের শালবাগান এলাকায় মদ্যপ হিসাবে পরিচিত লেদুর আপাতত ঠাঁই হয়েছে হাজতে। তবে হুঁশ ফিরতেই বিনয়ের অবতার লেদু। বলছেন, ‘‘বেজায় ভুল হয়ে গিয়েছে।’’
বর্ধমান পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে ওই শালবাগান এলাকা। সেখানে মহাত্মা গাঁধীর একটি মূর্তি রয়েছে। শনিবার এলাকার বাসিন্দারা দেখতে পান, কেউ বা কারা ওই মূর্তির চোখে থাকা গোল চশমাটি খুলে কালো সানগ্লাস পরিয়ে দিয়েছে। খোঁজখবর করে অবশেষে জানা যায়, লেদুই ‘অপরাধী’। ঠা ঠা রোদে দাঁড়িয়ে থাকা ওই মূর্তির চোখের চশমা খুলে মত্ত অবস্থায় লেদু পরিয়ে দিয়েছে সানগ্লাস। ব্যাপারটা ধরা পড়তেই লেদুর খোঁজ শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে মারধরও করেন। গাঁধী মূর্তির পা ধরে চাওয়ানো হয় ক্ষমাও। এর পর তাঁকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে।
লেদুর এমন কীর্তিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে শালবাগানে। ওই এলাকারই বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা অনন্ত পাল বলছেন, ‘‘মহাত্মা গাঁধীকে গোটা ভারত পুজো করে। সেখানে ওই ব্যক্তি গাঁধীমূর্তির চশমা ভেঙে দিয়ে চিৎকার করে বলে, মহাত্মা গাঁধী আজ অন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই কাজ চরম নিন্দার।’’
নেশার ঘোরে জল যে এত দূর গড়িয়ে যাবে তা আন্দাজ করতে পারেননি লেদু ওরফে বিনয়। নেশা সামান্য কাটতেই আফসোসের সুর তাঁর গলায়। বিনয় বলছেন। ‘‘এখানেই সব সময় বসি। ওঁকে (মহাত্মা গাঁধী) কাকু বলে ডাকি। এরকম হবে বুঝিনি। আমি ক্ষমা চেয়ে নিলাম।’’
লেদুর কাণ্ডে নিন্দার স্রোত বইছে। তবে উল্টো সুরও আছে। কেউ কেউ বলছেন, ‘‘গাঁধীজির আদর্শকে সামনে রেখে যাঁরা একের পর এক কুর্কীতি ঘটাচ্ছেন তাঁদের তুলনায় লেদুর কাণ্ড তুচ্ছই বলা চলে।’’