কুমারবাজারের এই সেই বন্ধ কারখানা। নিজস্ব চিত্র
দু’দশকেরও বেশি আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বার্নস স্ট্যান্ডার্ডের রানিগঞ্জের লালকুঠির সিলিকা ও কুমারবাজারের ‘ফায়ার ব্রিকস’ তৈরির কারখানা। অভিযোগ, সিলিকার কারখানাটির যাবতীয় পরিকাঠামো, যন্ত্র আগেই সব চুরি গিয়েছে। এখন, অস্তিত্বহীন হতে বসেছে কুমারবাজারের কারখানাটিও। সেটিরও অন্তত ৯০ শতাংশ পরিকাঠামো চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলপুর থেকে ৫০ টন ‘ফায়ার ব্রিকস’ উদ্ধার করে। তার পরে, ওই বন্ধ কারখানাটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
অতীতে স্যর বীরেন মুখোপাধ্যায়ের মালিকানাধীন ছিল কারখানা দু’টি। ১৯৭৩-এ কারখানা দু’টির রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হয়। অভিযোগ, সিলিকা কারখানা লাগোয়া জেনারেল ম্যানেজারের বাংলো ও ভবন থেকে ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সেটির আর কার্যত কোনও অস্তিত্বই নেই। এ দিকে, কুমারবাজারে ‘ফায়ার ব্রিকস’ কারখানার মূল ভবনের পুরো পরিকাঠামো, সব যন্ত্র চুরি হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। বর্তমানে পাঁচিল ভেঙে ইটও চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ।
কিন্তু কেন এই অবস্থা, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। ২০০০ সালে কারখানা বন্ধ হয়। সিটু অনুমোদিত ‘রিফ্র্যাক্টরি, সিরামিক ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক উমাপদ গোপ জানান, কারখানা দু’টির পরিকাঠামো রক্ষার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৩-এ সে সংস্থার মেয়াদ শেষ হলে কারখানা দু’টির ১৩০ জন প্রাক্তন শ্রমিক নিজেরাই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে থাকেন।
সিটুর অভিযোগ, ২০১১-য় রাজ্যে পালাবদলের পরে, রানিগঞ্জের তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি পুলিশ, প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে কারখানায় ঢুকে ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের কাজে থাকা সব কর্মীকে বার করে দেন। তার পরে থেকেই এই চুরি চলছে বলে অভিযোগ। সোহরাব যদিও বলেন, “কারখানার সম্পত্তি দখল করে মুনাফা করছিলেন ওই ইউনিয়নের কয়েক জন কর্ণধার। সেই অবৈধ কাজ বন্ধ করতে চেয়েছিলাম। বার্নস কর্তৃপক্ষের কাছে কারখানার সম্পত্তি বাঁচাতে পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানিয়েছিলাম।”
তবে এই মুহূর্তে দু’টি কারখানারই সব জমি রেল অধিগ্রহণ করেছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, রেলের কাছে কারখানা দু’টির নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। তবে, পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক অমিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কারখানা চত্বরে চুরির অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আরপিএফ তদন্ত শুরু করেছে। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”