শিল্প-সমস্যাই কি প্রচারের হাতিয়ার

CPMআসানসোলে আভাসবাবু ও আসানসোল কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে সূর্যকান্তবাবু বলেন, ‘‘জেলার শিল্পক্ষেত্রের শোচনীয় অবস্থার কথা মানুষ জানেন। আমাদের দুই প্রার্থীই সংসদে এখানকার সমস্যা নিয়ে সরব হবেন। তাঁরা জিতবেনই।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৯ ০০:৫২
Share:

শনিবার দুর্গাপুরে সিপিএম প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

সকাল হতেই ভিড় কর্মীদের। প্রার্থী আসছেন, আসানসোল-দুর্গাপুর লোকালে। শনিবার ওই ট্রেনে করে দুর্গাপুর স্টেশনে নামেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরী। তার পরে দিনভর কখনও মোটরবাইকে, হেঁটে প্রচার-জনসংযোগ সারলেন প্রার্থী। সরব হলেন এলাকার শিল্প পরিস্থিতি নিয়েও।

Advertisement

শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে এ দিনই অবশ্য তোপ দেগেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও। আসানসোলে আভাসবাবু ও আসানসোল কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে সূর্যকান্তবাবু বলেন, ‘‘জেলার শিল্পক্ষেত্রের শোচনীয় অবস্থার কথা মানুষ জানেন। আমাদের দুই প্রার্থীই সংসদে এখানকার সমস্যা নিয়ে সরব হবেন। তাঁরা জিতবেনই।’’

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে প্রচার-পর্বে এসেও একই সুরে সরব হন আভাসবাবুও। স্টেশন থেকে নেমে মোটরবাইকে করে আভাসবাবু যান সগড়ভাঙার বিডিও মোড়ে। সেখান থেকে এলাকা পরিক্রমা, এলাকাবাসীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় চলে। ছিল, তাসা পার্টি, আদিবাসী নৃত্যের আয়োজনও। সগড়ভাঙার মুসলিমপাড়ায় পাড়ায় মাজারে আভাসবাবুর মাথায় শুভেচ্ছা হিসেবে লাল রঙের চাদর বেঁধে দেওয়া হয়। কোথাও বা গোলাপ হাতে স্কুল পড়ুয়ারা আভাসবাবুকে স্বাগত জানান। বাসিন্দাদের অনেকেই এলাকার শিল্প-সঙ্কটের কথা জানান তাঁর কাছে। তা শুনে আভাসবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। মানুষের জীবন ও জীবিকা সুরক্ষিত রাখার জন্য লড়াই করব। গত বারের সাংসদ শিল্পাঞ্চলের শিল্পের দূরবস্থা লড়াই করতে পারেননি সংসদে। বরাবরের মতো আমরা মানুষের পাশে আছি। মানুষও আমাদের পাশেই।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শহরবাসীর মতে, এই আসনে প্রার্থী ঘোষণার পরে দেখা যাচ্ছে, আভাসবাবু প্রচার-পর্বে বিশেষ জোর দিচ্ছেন দুর্গাপুরকে। ঘটনাচক্রে, এই দুর্গাপুর ভোটের ফলে বহু বারই বামেদের পাশে থেকেছে। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রে সিপিএম এবং দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী জেতেন।

১৯৭৭-এ সাবেক দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র তৈরির সময়ে এবং ১৯৮০-তে জিতেছিলেন সিপিএম প্রার্থী। এর পরে ১৯৮৪ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত এই কেন্দ্রে জয়ধ্বজা উড়িয়েছিল সিপিএম। সীমানা পুনর্বিন্যাসের পরে তৈরি বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে ২০০৯-এও সেই ধারা অব্যাহত থাকে। ২০১৪-য় প্রথম হার। এ বার সেই ‘হৃত’ শক্ত মাটির খোঁজেই শিল্প-শহরে নজর বাম প্রার্থীর, মনে করছেন শহরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত লোকজন। তবে আভাসবাবুর কথায়, ‘‘শহর, গ্রাম, সর্বত্র সমান গুরুত্ব দিয়ে আমরা লড়াই করছি। আমরা জিতবই।’’

যদিও সিপিএম প্রার্থীর শিল্প-পরিস্থিতি নিয়ে সরব হওয়ার প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বাম আমলে সিটুর জঙ্গি আন্দোলনের জেরেই বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা বন্ধ হয়েছে। তার কুফল এখনও বইছে দুর্গাপুর। মানুষ তার জবাবও দেবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement