এই ঠেলাটিই উল্টে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
ভোট শেষের প্রায় ৪৮ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও বুধবার জেলার নানা প্রান্তে মারধর, হামলা অভিযোগ করল বিরোধীরা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তবে তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অণ্ডালের দক্ষিণখণ্ডের ধর্মরাজতলার বাসিন্দা দলীয় সমর্থক দীনবন্ধু গড়াই, তাঁর স্ত্রী ও পুত্রবধূকে মারধর করেছে তৃণমূল, অভিযোগ বিজেপি নেতা জয়ন্ত মিশ্রের। দীনবন্ধুবাবুর অভিযোগ, “বুধবার সকালে আমার বাড়িতে তৃণমূলের অণ্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য স্বপন হাজরার নেতৃত্বে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। আমাকে ওঁরা বলছেন, আমি না কি বিজেপিকে ভোট দিয়েছি। এ জন্য ভ্যান চালাতে দেবে না।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, তাঁর ছেলের চপের ঠেলাও বসতে দিচ্ছে না তৃণমূল। সংবাদমাধ্যমের কাছে দীনবন্ধুবাবুর অভিযোগ, ‘‘ভয়ে থানায় যেতে পারছি না। কারণ থানায় গেলে আরও বিপদে পড়তে হবে বলে তৃণমূলের লোকজন হুমকি দিয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বপনবাবু।
অশান্তির অভিযোগ উঠেছে শ্রীরামপুরেও। বিজেপি নেতা জয়ন্তবাবুর অভিযোগ, ওই রাতে দলীয় কর্মীরা ‘ফিস্ট’ করছিলেন। সেই সময়ে সঞ্জয় বাউরি নামে এক জন দলীয় কর্মীকে মারধর ও রাতে রিয়েল কাজোড়ার সুনীল মণ্ডলের বাড়ির সামনে গুলি ছুড়ে হুমকি দেয় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা, অভিযোগ জয়ন্তবাবুর। বিজেপির আসানসোল জেলা কমিটির সহ-সভাপতি প্রমোদ পাঠকের আরও অভিযোগ, মঙ্গলবার জামুড়িয়ার বীজপুরে দলীয় কর্মী সজল বাউরি, রাকেশ বাউরি, বুধবার সকালে পরাশিয়ার প্রসেনজিৎ বাউরিকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা মারধর করে। বিজেপি নেতৃত্ব জানান, সব ক’টি ক্ষেত্রেই তাঁরা দলগত ভাবে সংশ্লিষ্ট থানায় বিষয়গুলি জানিয়েছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অশান্তির অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরেও। সিপিএমের অভিযোগ, নির্বাচনের দিন দলের পোলিং এজেন্ট থাকার কারণে ভোলা রক্ষিত নামে এক জনের ঠেলায় থাকা খাবার ফেলে দেয় তৃণমূলের লোকজন। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ স্টেশন বাজারের ঘটনা। অভিযোগ, মারধরও করা হয়েছে ভোলাবাবুকে। সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল ভোট লুট করতে না পেরে, যত্রতত্র হামলা চালাচ্ছে। সেই হামলা থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছেন না।’’ অশান্তির খবর পেয়ে এলাকার সিপিএম নেতা, কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে স্টেশন রোড অবরোধ করেন তাঁরা। কোকআভেন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে প্রায় ৪০ মিনিট পরে অবরোধ ওঠে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া অন্য এক জন দলীয় পোলিং এজেন্টের ভাইকেও মারধর করেছে তৃণমূল, অভিযোগ সিপিএমের।
যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘কোথাও আমাদের কর্মী, সমর্থকরা হামলা চালাননি। হার নিশ্চিত জেনে বিরোধীরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’ পুলিশ জানায়, অভিযোগগুলির ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।