Deforestation

দেবীপুরে গাছ কাটায় দুর্নীতির নালিশ, অবরোধ 

বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার উপরে কালীতলা থেকে মাতিশ্বর বাজার পর্যন্ত ৮০৫টি গাছ কাটার বরাত পেয়েছেন তাহেরপুরের ওই ঠিকাদার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০০
Share:

—ফাইল চিত্র।

গাছের দাম নিয়ে দুর্নীতি ও নির্বিচারে গাছ কাটার অভিযোগে রবিবার মেমারির দেবীপুরের কালীতলায় পথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে দেবীপুর থেকে কালনার বুলবুলিতলা পর্যন্ত রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। বিডিও (‌মেমারি ১) বিপুল মণ্ডল গাছ কাটা আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ ও অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

Advertisement

বিডিও বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গাছ কাটা আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সোমবার দফতর খোলার পরে নথিপত্র দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ অবরোধকারীদের দাবি, ওই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ অনেক দিন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও দিনের পর দিন গাছ কাটায় তাঁদের সন্দেহ হয়। রবিবার সকালে ঠিকাদার রেজাবুল শেখের কাছে গাছ কাটার অনুমতিপত্র দেখতে চাওয়া হয়। সেখানে দেখা যায়, বন দফতর গত বছর ১৫ জুনের মধ্যে গাছ কাটার কাজ শেষ করতে বলেছিল। আর দেবীপুর পঞ্চায়েত গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছে চলতি মাসে, অভিযোগ তাঁদের।

ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের তরফে প্রশান্ত দাস, উজ্জ্বল দে-রা অভিযোগ করেন, “রাস্তা থেকে বেশ কিছুটা দূরে থাকা গাছও নির্বিচারে কাটা হচ্ছে। পুরনো নানা গাছে কোপ পড়েছে।’’ স্থানীয় চাষি লক্ষ্মীনারায়ণ দে, সুশান্ত হাজরাদের কথায়, ‘‘চাষের কাজের পরে গাছের তলাই ছিল আমাদের আশ্রয়। গাছগুলি নির্বিচারে কাটা হচ্ছে। অথচ, নতুন গাছ লাগানোর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি।’’

Advertisement

ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার উপরে কালীতলা থেকে মাতিশ্বর বাজার পর্যন্ত ৮০৫টি গাছ কাটার বরাত পেয়েছেন তাহেরপুরের ওই ঠিকাদার। সে জন্য তিনি পঞ্চায়েতে জমা দিয়েছেন মাত্র দু’লক্ষ ছ’হাজার টাকা। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘এই দাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, গাছ কাটা নিয়ে কী রকম দুর্নীতি হয়েছে। সাধারণ মানুষ ও বন দফতরকে ভাঁওতা দিয়ে মূল্যবান গাছ কাটা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ফোনে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারের দাবি, সর্বোচ্চ দর দিয়ে পঞ্চায়েতের কাছ থেকে গাছ বিক্রির ইজারা নিয়েছেন তিনি। বন দফতরের অনুমতি পাওয়ার পরে গাছ কাটতে এসেছিলেন। বেআইনি কী করেছেন, তা বুঝতে পারছেন না বলে দাবি তাঁর। দেবীপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় ক্ষেত্রপালেরও দাবি, “নিয়ম মেনেই গাছ বিক্রি করা হয়েছে। বিক্রেতাকেই গাছ কাটার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’’

এ দিন দুপুরে বিডিও ঘটনাস্থলে গিয়ে আপাতত গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে একটি ট্রাক্টরে করে কাটা গাছ ব্লক দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ, সোমবার দফতর খোলার পরে বিষয়টি নিয়ে ফয়সালা হবে,জানান বিডিও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement