আসানসোল স্টেশন। নিজস্ব চিত্র
হাওড়া, শিয়ালদহের পরে, এ বার পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল ডিভিশনেও লোকাল ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে লোকাল-পরিষেবা চালু হবে বলে জানা গিয়েছে। ট্রেন চালানোর প্রাথমিক প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল ডিভিশনে আপাতত মোট ২২ জোড়া লোকাল ট্রেন চলাচল করবে। এর মধ্যে বর্ধমান-আসানসোল শাখায় আট জোড়া, অণ্ডাল-সাঁইথিয়া শাখা, আসানসোল-ধানবাদ শাখা ও আসানসোল-যশিডি-ঝাঁঝা শাখায় চার জোড়া করে ট্রেন চলবে। অণ্ডাল-যশিডি শাখায় চলবে দু’জোড়া করে ট্রেন।
আসানসোল ডিভিশনে সারাদিনে ৫৫ জোড়া লোকাল ট্রেন চলে। লকডাউনের সময় থেকে এই ট্রেনগুলি চলাচল করছে না। কলকাতা-খড়্গপুর ডিভিশনে লোকাল চালু হওয়ার পরে, আসানসোল ডিভিশনে ট্রেন চালানোর দাবি তোলেন নিত্যযাত্রী থেকে ব্যবসায়ীরা। অবশেষে লোকাল চালু করার কথা ঘোষণা হওয়ায় খুশি তাঁরা। এ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানিয়েছেন, লোকাল চালু করার জন্য কারিগরি প্রস্তুতি একেবারেই শেষ মুহূর্তে। যাত্রী নিরাপত্তার কথা ভেবে সমস্ত রকম আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। রেলের তরফে নির্দিষ্ট দূরত্ব-বিধি মেনে যাত্রীদের যাতায়াত করার আবেদন করা হয়েছে।
শনিবার সকালে আসানসোল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, প্ল্যাটফর্ম ও আশপাশের এলাকায় সাফাই কাজ চলছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা ঘুরে দেখছেন আধিকারিকেরা। আসানসোল বাজারের ব্যবসায়ী দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘লোকাল ট্রেনে করেই ব্যবসার সামগ্রী বিভিন্ন এলাকায় আনা-নেওয়া করি। কিন্তু গত ন’মাস ধরে ট্রেন না চলায় ব্যবসা মার খাচ্ছে। ট্রেন চালু হলে ভাল হবে।’’
‘আসানসোল নিত্যযাত্রী অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক দেবাশিস রায় জানিয়েছেন, প্রতিদিন আসানসোল-সহ আশপাশের এলাকায় প্রায় ১৪ হাজার নিত্যযাত্রী যাতায়াত করেন। তাঁদের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মীরাও রয়েছেন। লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় অনেকেই ঠিক মতো কর্মস্থলে যেতে-আসতে পারছেন না। ট্রেন চালু হলে সেই সমস্যা অনেকটাই মিটবে। তবে দেবাশিসবাবুরা দাবি তুলেছেন, কোলফিল্ড এক্সপ্রেস চালু করার পাশাপাশি, ব্ল্যাক ডায়মন্ড ও আসানসোল থেকে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসও চালু করা হোক। কারণ, এই ট্রেনে করেও বহু নিত্যযাত্রী নিয়মিত কলকাতায় যাতায়াত করেন। আসানসোল স্টেশনে চা, তেলেভাজার দোকান রয়েছে দীনেশ মুদির। লোকাল ট্রেন চালুর খবর শুনে খুশি তিনিও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ট্রেন না চলায় গত ন’মাস ধরে ব্যবসা লাটে উঠেছে। ট্রেন চালু হলে লাভের মুখ দেখতে পাব।’’